মাঠের পার্টনারকেই জীবনসঙ্গী বানাচ্ছেন দিয়া, নাচলেন হলুদে
আরচ্যারিতে জুটি গড়ে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে প্রতিনিধিত্ব করছেন রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী। এবার মাঠের পার্টনারকেই জীবনসঙ্গী করতে যাচ্ছেন এই দুই দেশ সেরা আরচ্যার। দিয়া ও রোমানের মধ্যে প্রণয় ছিল বেশ কয়েক বছর ধরে। দুজনের মধ্যে ভালোলাগা, ভালোবাসার সম্পর্ক আরচ্যারি অঙ্গনের প্রায় সবারই জানা। তবে সে সম্পর্কে নানা সময়েই উত্থান-পতন ছিল। দুজনের সেই অম্ল-মধুর সম্পর্কই পরিণতি পেতে যাচ্ছে এবার। নিজেদের মন দেয়া-নেয়া শেষে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চলছেন এই সফল জুটি।
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) রাতে নীলফামারী জেলা শহরের আশা কমিউনিটি সেন্টারে পারিবারিক আবহে অনুষ্ঠিত হয়েছে দিয়া সিদ্দিকীর গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান। শুরুতে একঝাঁক তরুণ-তরুণীর সঙ্গে বেশ হাস্যোজ্জ্বল মুখে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন দিয়া। তার পরনে হলুদ রঙের পোশাক। চোখে-মুখে উচ্ছ্বাসের আভা। ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছিল গান। সেই গানের সঙ্গে নেচে ও ঠোঁট মিলিয়ে গায়ে হলুদের মঞ্চে উঠতে দেখা গেছে দিয়াকে।
দিয়ার বাবা নূর আলম সিদ্দিকী জানান, রোমান সানা ও তার পরিবার বর্তমানে নীলফামারীতে অবস্থান করছেন। বিয়ের পর রাতেই দিয়াকে তারা নিয়ে যাবেন।
তিনি বলেন, তাদের কাছে আমার প্রত্যাশা অনেক বড় যেহেতু তারা খেলোয়াড়। আমার প্রত্যাশা তারা যেন অলিম্পিক জয় করে বাংলার বিজয়টা ছিনিয়ে আনতে পারে। আর বিয়েতে সব বাবা-মায়ের মন খারাপ থাকে থাকাটাই স্বাভাবিক। তারপরও মেয়েকে দিতে হয় বিদায়। কষ্ট হলেও মেয়েকে বিদায় দিতে হচ্ছে। দেশবাসীর কাছে আশা তাদের বিবাহোত্তর শুভকামনা ও তাদের প্রতি যেন দোয়া থাকে। তারা যেন সত্যিকারে সুখি দাম্পত্য জীবন গড়তে পারে সেই জন্য সকলে দোয়া করবেন।
দিয়া সিদ্দিকী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সকলেই জানি বিয়ে মানে আনন্দের বিষয়। বিয়ে করতে যাচ্ছি আল্লাহর অশেষ রহমতে। যেহেতু এটা আমার জন্মভূতিতে করতে পারছি সেজন্য আল্লাহর কাছে অনেক শুকরিয়া। আলহামদুলিল্লাহ নীলফামারীতে বিয়েটা করতে পারতেছি। আমার বন্ধু বান্ধব, আত্নীয় স্বজন ও নিজের পরিবারের সকলকে একসাথে পেয়ে অনেক আনন্দিত। সকলকে যে একসাথে করতে পারেছি এটার জন্য অনেক খুশি। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন ভবিষ্যতে আমার বিবাহিত জীবন, দাম্পত্য জীবন সুখে কাটাতে পারি।
রোমান আনসারে ল্যান্স নায়েক পদে আছেন। দিয়া বিকেএসপির পাট চুকিয়ে এ বছরই যোগ দিয়েছেন আনসারে। নীলফামারী জেলা সদরে উকিলের মোড়ে দিয়াদের বাড়ি। তার বাবা নূর আলম সিদ্দিকী একটি বেসরকারি টেলিভিশনের নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি। দিয়া খেলার মতো পড়াশোনাতেও সফল। এইচএসসিতে জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন।
ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। সুবিশাল ক্যারিয়ার সামনে রেখে আগেই জীবনের আরেকটি ইনিংস শুরু করছেন দিয়া। ক্রীড়াঙ্গনে অনেক ডিসিপ্লিনেই ক্রীড়াবিদরা খেলা ছাপিয়ে বাস্তব জীবনেও জুটি গড়েছেন। আরচ্যারিতে এটি দ্বিতীয় জুটি। আগের জুটিটি রিকার্ভ-কম্পাউন্ড ইভেন্টের ছিল। এবার রিকার্ভ ইভেন্টের দু'জন বিয়ের পিড়িতে বসতে যাচ্ছেন।
শরিফুল ইসলাম/নীলফামারী/