একশ তরুণ গবেষক তৈরিতে কাজ করবে ডাটাস্ক্যাপ
গত এক যুগে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। ২০৪১ সালে উন্নত দেশের কাতারে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। দেশের মোট জিডিপি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়, প্রবৃদ্ধির হারসহ অন্যান্য উন্নয়ন সূচকের অভাবনীয় অগ্রগতি এবং সরকারের সময় উপযোগী দিক নির্দেশনায় দ্রুত এগিয়ে চলেছে দেশ ।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশের গবেষণা ক্ষেত্রে তেমন উন্নয়ন হয়নি যেখানে একটি দেশের টেকসই উন্নয়নে গবেষণা অপরিহার্য। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে আমরা যদি শিক্ষা ও গবেষণা খাতকে বিশ্বমানে উন্নত না করতে পারি তাহলে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের এ উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়বে।
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যাপকদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে গবেষণার কাজ করার সুযোগ পেয়ে থাকে মূলত পিএইচডি গবেষক/শিক্ষার্থীরা, কিন্তু গবেষণার সংস্কৃতি তৈরির জন্য শিক্ষার্থীদের অনার্স পড়ার সময় থেকেই গবেষণার মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তর ধারণা এবং ব্যবহারিক জ্ঞানার্জন করতে হয়।
চলমান এই শূন্যতা পূরণের লক্ষ্যে ডাটাস্ক্যাপ হাতে নিয়েছে ইউথ রিসার্চার প্রোগ্রাম বা তরুণ গবেষক কার্যক্রম। বিগত সাত বছর ধরে ডাটাস্ক্যাপ রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটেন্সি লিমিটেড একটি স্বতন্ত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংগঠনের হয়ে বিভিন্ন সামাজিক গবেষণা ও মাল্টিন্যাশনাল এবং ন্যাশনাল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের হয়ে বাজার গবেষণার কাজে সুনামের সঙ্গে অবদান রেখে চলেছে। গবেষণার পাশাপাশি ডাটাস্ক্যাপ দক্ষতা উন্নয়ন এবং তরুণ গবেষক তৈরির লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের আয়োজন করে যাচ্ছে।
তরুণ শিক্ষার্থীদের গবেষণায় আগ্রহী করে তোলা এবং হাতে কলমে গবেষণার প্রাথমিক বিষয়াদি শিক্ষা দেওয়ার জন্য এই ব্যতিক্রমধর্মী কার্যক্রম হতে নিয়েছে ডাটাস্ক্যাপ। তরুণ গবেষণা কার্যক্রমের মাধ্যমে ২০২২ সালে প্রশিক্ষত ১০০ জন তরুণ গবেষক তৈরিতে কাজ করবে সংস্থাটি। দেশ বির্নিমাণে ভালো মানের গবেষণা হবে দেশের তরুণদের হাত ধরে। ৬ মাসব্যাপী এ কার্যক্রমে দেশের সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকগণ সেশন পরিচালনা করবেন।
প্রতিটি শিক্ষার্থী ৬ মাস ধরে একজন গবেষকের তত্ত্বাবধানে থেকে গবেষণার থিওরিটিক্যাল এবং প্রাক্টিক্যাল জ্ঞানার্জন করতে পারবে। যার দ্বারা দেশের অসংখ্য স্বপ্নময় তরুণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে সক্ষম হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
ইউথ রিসার্চের প্রোগ্রাম বা তরুণ গবেষক কার্যক্রমের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে গবেষণা প্রস্তাবনা তৈরি, তথ্য সংগ্রহ, তথ্য বিশ্লেষণ এবং প্রতিবেদন প্রস্তুতকরণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। মেয়াদ শেষে একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণলদ্ধ জ্ঞান ব্যবহার করে যেমন একজন শিক্ষার্থী গবেষণায় সিদ্ধহস্ত হবেন তেমনি কর্মক্ষেত্রেও একধাপ এগিয়ে থাকতে পারবেন। শূন্য থেকে কীভাবে গবেষণা শুরু করবেন তার বিস্তারিত দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এ ইউথ রিসার্চর প্রোগ্রাম বা তরুণ গবেষক কার্যক্রমের মাধ্যমে।
অনুষ্ঠানে ডাটাস্ক্যাপ রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটেন্সি লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাকিব হোসেন বলেন, তরুণ গবেষক তৈরিতে আমাদের ইউথ রিসার্চার প্রোগ্রাম বা তরুণ গবেষক কার্যক্রম চলমান থাকবে। আমরা চেষ্ঠা করছি বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্নয় করে অংশগ্রহণকারীদের সব থেকে ভালো মানের সহায়তা নিশ্চিত করতে। আমরা ভবিষ্যতে ডাটাস্ক্যাপ রিসার্চ ফান্ড গঠন করবো যেখান থেকে তরুণ গবেষকগণ তাদের গবেষণা ব্যয় বহন করতে পারবে যেটি তরুণ গবেষক তৈরিতে আরও বেশি অবদান রাখবে। তিনি দেশের সব গবেষকদের এক হয়ে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে তরুণ গবেষক তৈরিতে কাজ করার আহ্বান জানান।
ডাটাস্ক্যাপ রির্সাচ অ্যান্ড কনসালটেন্সি লিমিটেডের ডিরেক্টর মাহমুদুন নবী সোহেল বলেন, যারা ভবিষ্যতে এ ডেভেলপমেন্ট ফিল্ডে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে চায়, তাদের জন্য এ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ অত্যন্ত ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রায়হান শরীফ বলেন, আমি আশা করি যে, এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বর্তমানের যুব সম্প্রদায় নিজেকে ভবিষ্যতে একজন সুপ্রতিষ্ঠিত গবেষক হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে পারবে।
বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ও গবেষক অসীম কুমার সাহা বলেন, বর্তমানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এই প্রশিক্ষণ সুনিপুণভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে তারা ভবিষ্যতে নিজেদের ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট এবং গবেষণা কাজে নিজেকে আরও ভালোভাবে সম্পৃক্ত করতে পারবে।
এসএম