হুয়াওয়ের সহযোগিতায় বুয়েটে আইসিটি একাডেমি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের জন্য স্থাপন হচ্ছে আইসিটি একাডেমি। বিশেষ এ একাডেমি স্থাপনে বুয়েটের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে প্রযুক্তিপণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। এরইমধ্যে প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। বুয়েট কাউন্সিল ভবনে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চলতি বছরের এপ্রিলের মধ্যে একাডেমিক ভবনে তৈরি হবে হুয়াওয়ে-বুয়েট আইসিটি একাডেমি। এতে নিশ্চিত করা হবে কারিগরি প্রযুক্তি ও যন্ত্রাদি। সঙ্গে থাকবে কানেক্টিভিটি, যার মাধ্যমে বিশ্বের ১ হাজার দুইশরও বেশি প্রশিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ পাবেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
১৯টি ভিন্ন বিষয়ের ওপর ৮৩টি সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম থাকবে আইসিটি একাডেমিতে। কোর্স ও সার্টিফিকেশন সমন্বয় করবে হুয়াওয়ে অথরাইজড ইনফরমেশন অ্যান্ড নেটওয়ার্ক একাডেমি (এইচএআইএনএ)। একাডেমি থেকে শিক্ষার্থীরা তিন গ্রেডে সার্টিফিকেট পাবেন। গ্রেডগুলো হচ্ছে- অ্যাসোসিয়েট, প্রফেশনাল ও এক্সপার্ট। এ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা চাকরির বাজারের জন্য নিজেদের উপযুক্ত করে তৈরি করতে পারবেন। তাদের জন্য চাকরিমেলারও আয়োজন করা হবে।
অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের এন্টারপ্রাইজ বিজনেস গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট লিনঝিজুন এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্মারকে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিওও তাও গুয়াংইয়াও। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হুয়াওয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বুয়েটের শিক্ষকরা। বাংলাদেশের অন্যান্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গেও এক হয়ে বিশেষ আইসিটি একাডেমি পরিচালনা করতে চায় হুয়াওয়ে।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, যেকোনো দেশের অগ্রগতির জন্য শিক্ষা, বিশেষ করে আইসিটি শিক্ষার গুরুত্ব অনেক বেশি। ছেলেমেয়েরা বিশ্বে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছে। আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। এ যাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে হুয়াওয়ে এবং বুয়েট যে পদক্ষেপ নিতে চলেছে, তা আশাব্যঞ্জক। আমাদের সামনে যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন রয়েছে, তা পূরণ করতে বুয়েটের মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামী দিনে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ মানবসম্পদের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।
বুয়েটের উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, বিশ্বব্যাপী হুয়াওয়ে একটি বিশ্বস্ত নাম। তাই, আইসিটি একাডেমি তৈরির উদ্যোগ এবং এর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এ প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হতে পেরে আমরা আনন্দিত। ইতিপূর্বে আমরা জিএসএম ল্যাব প্রতিষ্ঠাকালে হুয়াওয়ের কাছ থেকে যে আন্তরিক সহযোগিতা পেয়েছিলাম, তা আমাদের ছাত্রছাত্রীদের সুশিক্ষার জন্য বেশ ফলপ্রসূ ভূমিকা পালন করেছিল। আসন্ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণে হুয়াওয়ে আইসিটি একাডেমির মতো একটি প্রতিষ্ঠান নিঃসন্দেহে বিপুল চালিকাশক্তি জোগাবে।
হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিওও তাও গুয়াংইয়াও বলেন, তরুণদের কর্মদক্ষতার উন্নয়ন না ঘটলে একটি দেশ উপকৃত হতে পারে না। উন্মুক্ত বৈশ্বিক শিক্ষার সুযোগ শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি। এ সুযোগ তাদের চিন্তাশক্তিকে বাড়িয়ে তোলে অনেক গুণ। আইসিটি ক্ষেত্র প্রতি মুহূর্তেই নতুন নতুন আবিষ্কার নিয়ে আবির্ভাব হচ্ছে। গত ২২ বছর ধরে আমরা বাংলাদেশের আইসিটি ক্ষেত্রের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি আমরা চাই এদেশের ছেলেমেয়েরা আরও বেশি দক্ষতা অর্জন করুক।
অলাভজনক শিক্ষা প্রোগ্রাম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এ একাডেমি দুটি বিষয়কে সামনে রেখে কাজ করবে। এর মধ্যে একটি হলো আইসিটি খাতের চাহিদা পূরণে ট্রেনিং ও লার্নিং সল্যুশন প্রদান করা; অন্যটি হলো আইসিটি খাতের জন্য একটি ট্যালেন্ট ইকোসিস্টেম তৈরি করা।
এমএইচএন/আরএইচ