দেশে তৈরি দুই মডেলের স্মার্টফোন আনল নোকিয়া
অবশেষে নোকিয়ার ‘জি’ সিরিজের জি-১০ ও জি-২০ মডেলের স্মার্টফোন দুটি বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে এইচএমডি গ্লোবাল বাংলাদেশ। ফোনগুলো তৈরি করা হয়েছে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটির নোকিয়া কারখানায়।
বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বাংলাদেশে তৈরি’ নোকিয়া ফোনের যাত্রা শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি ভাইব্রেন্ট সফটওয়্যার ও ইউনিয়ন গ্রুপ বাংলাদেশের সমন্বয়ে গঠিত ‘ভাইব্রেন্ট সফটওয়্যার লিমিটেড’ বিশ্বখ্যাত নোকিয়া ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন বাংলাদেশে তৈরির জন্য প্রথম কারখানাটি স্থাপন করে। দেশের মাটিতে তৈরি মোবাইল ফোন দিয়ে ব্যবহারকারীদের মন জয় করতে উন্নত প্রযুক্তির এই দুটি সেট বাজারে আনল প্রতিষ্ঠানটি।
এইচএমডি গ্লোবালের জেনারেল ম্যানেজার (প্যান এশিয়া) রাভি কুনওয়ার বলেন, আজ আমাদের জন্য স্মরণীয় একটি দিন। নিঃসন্দেহে গত এক বছর ছিল অনেক চ্যালেঞ্জিং, যা আমাদের চিন্তা-ভাবনা করে প্রস্তুত হয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। বাংলাদেশে কারখানা স্থাপন ও সেখানে সংযোজিত হ্যান্ডসেটের উন্মোচন আমাদের এই যাত্রার একটি মাইলফলক।
জি-১০ এবং জি-২০ ফোন দুটি তিন দিনের ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতে সক্ষম। এটাই এ পর্যন্ত নোকিয়া স্মার্টফোনে সর্বোচ্চ। নোকিয়ার জি-২০ সেটটি স্মার্টফোনের সিগনেচার ‘অ্যান্ড্রয়েড প্রতিশ্রুতি’ দ্বারা সমর্থিত, যা একজন ব্যবহারকারীর ডাটা যতটা সম্ভব সুরক্ষিত রাখতে তিন বছর পর্যন্ত মাসিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং দুই বছর পর্যন্ত অপারেটিং সিস্টেম হালনাগাদ করে।
আঙ্গুলের ছাপ ও ব্যবহারকারীর ফেস রিকগনিশনের মাধ্যমে ফোন আনলকের অপশন থাকছে দুটি মডেলেই। ফোনগুলোতে রয়েছে আকর্ষণীয় সাড়ে ছয় ইঞ্চি টিয়ারড্রপ ডিসপ্লে। চারটি ব্যাক ক্যামেরা সম্বলিত জি-২০ ফোনে আছে পর্যাপ্ত স্টোরেজ, ওজো সারাউন্ড অডিওসহ আকর্ষণীয় ৪৮ মেগাপিক্সেলের ওয়াইড এঙ্গেল ব্যাক ক্যামেরা।
নোকিয়া জি-১০ মোবাইলে আছে ত্রিপল রিয়ার ক্যামেরা আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্বলিত শুটিং মোড, যার মাধ্যমে কম আলোতেও ভালো ছবি তোলা সম্ভব।
গাজীপুরের হাইটেক সিটির ব্লক ৫-এ নোকিয়া ফোনের কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তিতে পূর্ণ এই কারখানাটি প্রশস্ত এবং দ্বিতল বিশিষ্ট। একাধিক যাচাই ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে পণ্যের সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করা হয়।
ইউনিয়ন গ্রুপের ডিরেক্টর আলভী রানা বলেন, নোকিয়ার মত গ্লোবাল একটি ব্র্যান্ডের অংশীদার হওয়া আমাদের জন্য খুবই সম্মানজনক। এইচএমডি গ্লোবালের নির্দেশনায় ইউরোপীয় মানে আমরা কারখানা স্থাপন করেছি। নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশে তৈরি এই হ্যান্ডসেটগুলো ভোক্তারা সাশ্রয়ী মূল্যে পাবেন। এটি দেশের স্মার্টফোন মার্কেটে নোকিয়ার শেয়ার বাড়াতে সাহায্য করবে।
দুটি মোড়কজাতকরণ ও চারটি সংযোজনসহ মোট ছয়টি প্রোডাকশন লাইন আছে কারখানাটিতে। নিজস্ব পরীক্ষাগার সম্বলিত কারখানাটি প্রয়োজনীয় সব অবকাঠামোতে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং কারখানাতে প্রায় ২০০ জন কর্মী রয়েছে। শুরুতে কারখানায় প্রতিদিন ৩০০ ফোন সংযোজন করা হবে।
স্থানীয়ভাবে তৈরি করা নোকিয়া স্মার্টফোন আমদানি করা ফোনের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম দামে পাওয়া যাবে। নোকিয়া জি-১০ এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৪৯৯ টাকা এবং জি-২০ এর মূল্য ১৪ হাজার ৯৯৯ টাকা।
এমএইচএস