অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ
ভারত মহাসাগরের সৌন্দর্যমণ্ডিত দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। শান্ত, মনোরম পরিবেশ ও পুরোনো সমুদ্র সৈকত মালদ্বীপের প্রধান আকর্ষণ, যেখানে পানির রঙ নীল আর বালির রঙ সাদা। এখানকার দ্বীপগুলোর চারদিকে ঘিরে আছে সাগরের অফুরন্ত জলরাশি।
এশিয়ার সবচেয়ে ছোট এবং পৃথিবীর সবচেয়ে নিচু দেশ মালদ্বীপ। দেশটিতে প্রতি বছর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লাখ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করতে আসেন। সূর্যাস্তের পর ঢেউয়ের তালে তালে জ্বলজ্বল করতে থাকে দেশটির বালুময় সমুদ্র সৈকত। সমুদ্রের পানি থেকে বিচ্ছুরিত হয় অদ্ভুত আলো। সে এক অসাধারণ দৃশ্য যা দেখে চোখ বিস্ময়ে আটকে থাকে। এ জন্য অনেকের কাছেই হানিমুনের জন্য সবচেয়ে পছন্দের এ দেশ।
একমাত্র মালদ্বীপেই বিশালাকার সাবমেরিনে করে সমুদ্রের তলদেশে ঘুরে বেড়ানো যায়। পর্যটকরা প্রায় ১৮০ ফুট পর্যন্ত সমুদ্রের তলদেশে যেতে পারেন। গভীর সমুদ্রের সৌন্দর্য সবাইকে বিমোহিত করে। যেখান থেকে পর্যটকরা সমুদ্রের বিভিন্ন রঙের মাছ খুব কাছ থেকে দেখতে পারেন, শুনতে পারেন সামুদ্রিক পাখির ডাক।
মালদ্বীপের প্রধান আকর্ষণগুলোর একটি হলো পানির নিচে রেস্টুরেন্ট যা সমুদ্রের ৬ মিটার গভীরে স্বচ্ছ কাঁচ দিয়ে নির্মিত। এতে একসঙ্গে ১০ থেকে ১২ জন অতিথি বসতে পারেন। নানা রঙের সুস্বাদু খাবার খাওয়ার পাশাপাশি স্বচ্ছ কাঁচ দিয়ে দেখা যায় নানা প্রজাতির সামুদ্রিক বড় মাছ।
শ্রীলঙ্কা থেকে প্রায় ৪৫০ মাইল পশ্চিম-দক্ষিণে ১ হাজার ২০০টি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত মালদ্বীপ। এর মধ্যে ২৫০টি দ্বীপ ব্যবহারযোগ্য। এতে রয়েছে ২৮টি অ্যাটোল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা মাত্র এক দশমিক পাঁচ মিটার। বিষুবরেখার কাছে অবস্থিত হওয়ায় মালদ্বীপ বিশ্বের সবচেয়ে নিচু দেশ হিসেবে পরিচিত। দেশটিতে মাত্র একটি ঋতু। সারাবছরের গড় তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৯৮ বর্গ কিলোমিটারের শতভাগ মুসলিম দেশ মালদ্বীপের রাষ্ট্রীয় ভাষা ধিবেহী আর মালদ্বীপীয় রুপাইয়া হলো মুদ্রার নাম।
দেশটির মাথাপিছু আয় ৯ হাজার ১২৬ ডলার। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মালদ্বীপের মাথাপিছু আয় সবচেয়ে বেশি। আদিম কাল থেকেই সামুদ্রিক মাছ হচ্ছে দেশটির অর্থনীতির মূলভিত্তি। মালদ্বীপ টুনা মাছের জন্য বিখ্যাত। তবে বর্তমানে দেশটির বড় শিল্প হলো পর্যটন। বৈদেশিক আয়ের প্রায় ৬৫ শতাংশই আসে পর্যটন থেকে। বর্তমানে দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি। ১৯৬৫ সালের ২৬ জুলাই মালদ্বীপ ব্রিটিশদের কাছ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে এবং ১৯৬৮ সালে ‘সালাতানাতে মালদ্বীপ’ থেকে ‘রিপাবলিক মালদ্বীপে’ পরিণত হয়।
আরএইচ