কবরী

;

চট্টগ্রামের মেয়ে মিনা পাল। যাকে সবাই চেনেন সারাহ বেগম কবরী নামে। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে উঠেন। ঠিক এক বছর পর তিনি নজরে আসেন পরিচালক সুভাষ দত্তের। সংগীত পরিচালক সত্য সাহার সূত্রে এই নির্মাতা খুঁজে পান কিংবদন্তি অভিনেত্রীকে।

;

কবরীকে দেখতে চট্টগ্রাম গিয়েছিলেন সুভাষ দত্ত। কিন্তু বাসায় ছিলেন না কবরী। ঢাকায় ফিরে আসেন পরিচালক। এরপর কবরীর ছবি পাঠানো হয় নির্মাতার কাছে। ছবি দেখার পর সুভাষ দত্ত অনেকদিন কোনও খোঁজ নেননি কবরীর।

;

হঠাৎ একদিন ঢাকায় ডাক পড়ে কবরীর। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় চলে আসেন। বিউটি বোর্ডিংয়ে কবরীকে প্রথম দেখেন সত্য সাহা। প্রথম দেখাতেই ‘সুতরাং’ সিনেমার জন্য চূড়ান্ত করে ফেলেন। নামও পাল্টে ফেলা হলো। মিনা পাল থেকে হয়ে যান কবরী।

;

তৎকালীন উর্দুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তখন বাংলা সিনেমারও ব্যাপক জনপ্রিয়তা তৈরি হয়। প্রথম সিনেমার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি কবরীকে। একের পর এক হিট সিনেমা মুক্তি পায় তার।

;

বাংলার পাশাপাশি উর্দু সিনেমাতেও দেখা গেছে কবরীকে। এরমধ্যে রয়েছে জহির রায়হানের ‘বাহানা’, খানা আতাউর রহমানের ‘সোয়ে নদীয়া জাগে পানি’ ও কাজি জহিরের ‘মীনা’। সিনেমাগুলো বেশ জনপ্রিয়তা পায়। 

;

বাংলা সিনেমার সফল জুটি রাজ্জাক-কবরী। ১৯৬৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘আবির্ভাব’ সিনেমা দিয়ে তাদের রসায়ন শুরু। তাদের জনপ্রিয় ও সফল সিনেমাগুলো হলো ময়না মতি (১৯৬৯), নীল আকাশের নীচে (১৯৬৯), ক খ গ ঘ ঙ (১৯৭০), দর্প চূর্ণ (১৯৭০), কাঁচ কাটা হীরে (১৯৭০), দীপ নেভে নাই (১৯৭০), স্মৃতিটুকু থাক (১৯৭১), রংবাজ (১৯৭৩)।

;

কবরী প্রথমে বিয়ে করেন চিত্ত চৌধুরীকে। যিনি ‘সুতরাং’ সিনেমার প্রযোজক। তাদের সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে তিনি সফিউদ্দীন সরোয়ারকে বিয়ে করেন। তাদেরও বিচ্ছেদ হয়ে যায় ২০০৮ সালে। পাঁচ ছেলের মা ছিলেন মা তিনি। 

;

১৯৭১ সালে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঢাকা থেকে প্রথমে গ্রামের বাড়ি এবং পরে সেখান থেকে ভারতে পাড়ি জমান কবরী। কিন্তু তাই বলে দেশের এমন ক্রান্তিকালে চুপ করে বসে ছিলেন না তিনি। ভারতে থেকে  মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে পুরো সময়টা কাজ করেছন প্রয়াত এই কিংবদন্তি অভিনেত্রী।

;

কবরী ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

;