‘শিশুর সুষম বিকাশে প্রথম ৮ বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ’
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, ‘সুষ্ঠু শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, সামাজিক ও আবেগীয় বিকাশের জন্য শিশুদের জীবনের প্রথম ৮ বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ে শিশুর শিক্ষা ও বিকাশের ভিত্তি রচিত হয়। মেধাসম্পন্ন জাতি গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিশুবান্ধব সরকার শিশুর খাদ্য, পুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা, সুরক্ষা ও শিক্ষা নিশ্চিত করছে। গর্ভাবস্থা থেকেই মা ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি চালু করেছে। শিশুর জন্মের প্রথম এক হাজার দিনকে গুরুত্ব দিয়ে ‘শিশুর প্রারম্ভিক যত্ন ও বিকাশের সমন্বিত নীতি-২০১৩’ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা সংবিধানে শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করেন। দেশ স্বাধীনের পরপরই শিশুদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যু রোধ এবং প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে। এসব স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমডিজি অ্যাওয়ার্ড, পিস ট্রি, দুবার সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড ও ভ্যাকসিন হিরো অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন।’
শনিবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকার শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ আরলি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’ (বেন) আয়োজিত দুই দিনব্যাপী জাতীয় ইসিডি সম্মেলনের প্রথম দিনে উদ্বোধনীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ইসিডি নেটওয়ার্কের সভাপতি ড. মঞ্জুর আহমেদ। গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি তমো হোজোমি বিশেষ অতিথির বক্তৃতা রাখেন। কিনোট
উপস্থাপন করেন সৈয়েদা সাজিয়া জামান।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, ‘মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ৭ লাখ ৭০ হাজার দরিদ্র মায়ের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ২ লাখ ৭৫ হাজার কর্মজীবী নারীর জন্য ল্যাক্টেটিং মা ভাতা কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের ১৫টি মন্ত্রণালয় ৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি শিশুকেন্দ্রিক বাজেট বাস্তবায়ন করছে। বছরের প্রথমদিনে শিক্ষার্থীদের বই প্রদান ও এক কোটি ৪০ লাখ
শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। এসবই শিশুদের জন্য বিনিয়োগ। শিশু বিকাশ কেন্দ্রের মাধ্যমে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। তাদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষায়িত কার্যক্রম গ্রহণ করেছে সরকার।’
‘অপুষ্টির কারণে শিশুদের উচ্চতা ও ওজন কম হয়’ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যার ফলে শিশুদের স্কুলে যেতে লেখাপড়া শিখতে দেরি হয়। যথাযথভাবে ইসিডি পলিসি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসিডি সম্মেলন থেকে প্রাপ্ত সুপারিশ ও কর্মপরিকল্পনা শিশুদের উন্নয়ন ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
দুদিনব্যাপী সম্মেলনে শিশুর পুষ্টি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সুরক্ষা বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন ৬টি প্ল্যানারি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে সরকারি, জাতিসংঘ, দেশি-বিদেশি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশ নেবে। এবারের সম্মেলনে প্রতিপাদ্য- Early Childhood Care and Development in the Time of Covid-19 and Beyond.
পিএসডি/এফআর