ইকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের আয়োজিত ওয়েবিনার

কৃষি জমিতে রাসায়নিকের ব্যবহার কিভাবে কমিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে গবেষণা করে প্রযুক্তি ও সমাধান বের করার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে ‘খাদ্য নিরাপত্তা ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ’ শীর্ষক এক অনলাইন সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গবেষক ও বিজ্ঞানীদের প্রতি তিনি এ আহ্বান জানান।

ইকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের আয়োজিত ওয়েবিনারে কৃষিমন্ত্রী বলেন, খাদ্য উৎপাদনে মাটি ও পানি হলো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এ দুটির গুণাগুণ ধরে না রাখতে পারলে এবং পরিবেশ ভাল না রাখতে পারলে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। পরিবেশ ও প্রতিবেশ ধ্বংস হবে। কাজেই প্রকৃতি ও প্রতিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখেই কাজ করতে হবে। কোনোভাবেই যাতে প্রকৃতি ও প্রতিবেশ নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি জানান, ফসলের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সার, কীটনাশকসহ কেমিক্যাল ব্যবহার করতে হবে। যতই বলা হোক না কেনো প্রাকৃতিক পরিবেশে অর্গানিকভাবে কৃষি উৎপাদন করতে হবে, কিন্তু বাংলাদেশ, ভারত ও চীনের মতো জনবহুল দেশেও কেমিক্যাল ব্যবহার এড়ানো যাবে না।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্বল্প জমি থেকে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে না পারলে, শুধু অর্গানিক পদ্ধতিতে দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। তবে কেমিক্যাল বা ইনঅর্গানিক উপাদানের ব্যবহার কিভাবে কমিয়ে আনা যায় ও কিভাবে পরিবেশ রক্ষা করা যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা, নিরাপদ ও পুষ্টিসম্মত খাবার এ তিন বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। পুষ্টি নিশ্চিতে শুধু শাকসবজি নয়- প্রয়োজন মাছ, মাংস, দুধ, ডিম প্রভৃতি।

খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়লে সীমিত আয়ের মানুষ পুষ্টিসম্মত খাদ্য থেকে বঞ্চিত হবে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী জানান, একদিকে দেশের অধিকাংশ মানুষের আয় কম। অন্যদিকে অর্গানিক পদ্ধতিতে খাদ্য উৎপাদন করলে খরচ বাড়বে। তাই খাদ্যপণ্যের দামও বাড়বে। এতে দেশের সীমিত আয়ের মানুষ প্রয়োজনীয় পুষ্টিসম্মত খাদ্য কিনতে পারবে না। পশ্চিমা বিশ্বে অর্গানিক কৃষি সম্ভব। তাদের জমি বেশি, সম্পদ বেশি। মানুষের আয়ও বেশি। কিন্তু বাংলাদেশে অর্গানিক পদ্ধতিতে যে উৎপাদনশীলতা থাকবে তাতে কোনোভাবেই খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।

সেমিনারে প্রধান বক্তা ছিলেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক শাইখ সিরাজ। ইকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক এম আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. গিয়াসউদ্দীন মিয়া, সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রুহুল আমীন প্রমুখ এ সময় বক্তব্য রাখেন।

একে/এমএইচএস