বিজেআরআই উদ্ভাবিত লবণাক্ততাসহিষ্ণু দেশি পাটের জাত ‘বিজেআরআই দেশি পাট-১০’

বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) উদ্ভাবিত লবণাক্ততাসহিষ্ণু দেশি পাটের জাত ‘বিজেআরআই দেশি পাট-১০’ এর অনুমতি দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড। চলতি বছরেই লবণাক্ততাসহিষ্ণু এ জাতের নতুন পাট কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে।

মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় বীজ বোর্ডের ১০৪তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ও জাতীয় বীজ বোর্ডের সভাপতি মো. মেসবাহুল ইসলাম তাতে সভাপতিত্ব করেন।

মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কৃষি মন্ত্রণালয়ে জাতীয় বীজ বোর্ডের ১০৪তম সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় বীজ বোর্ডের সভাপতি মো. মেসবাহুল ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করেন।

সভায় উপস্থিত থাকা বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বিজেআরআই) প্রজনন বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নার্গীস আক্তার ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শিগগিরিই কৃষকের দোরগোড়ায় জাতটি নিয়ে যাওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, এটি বিজেআরআইর উদ্ভাবিত দেশি পাটের একটি উন্নত জাত। দেশি পাটের জার্মপ্লাজম ১৬০ই এর সঙ্গে জার্মপ্লাজমের সংকরায়নের মাধ্যমে জাতটি উদ্ভাবন করা হয়েছে। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে, এ জাত নাবীতে বপন করে ও আশু কেটে একই জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ ও পরে রবি শস্যের আবাদ করা যায়।

এছাড়া জাতটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো দেশের দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত এলাকায় বপন চাষ উপযোগী। দেশের সবস্থানেও চাষাবাদ করে সুফল মিলেছে। জাতটির অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে আজ সভায় অনেকেই প্রশংসা করেছেন। দ্বিতীয়বারের মতো লবণাক্ততাসহিষ্ণু পাটের নতুন জাত উদ্ভাবনে সফল হলেন দেশের কৃষি বিজ্ঞানীরা। এর আগের জাত ছিল বিজেআরআই দেশি পাট ৮।

নতুন উদ্ভাবিত এ পাটের কাণ্ড সবুজ, পাতা ডিম্বাকৃতির লম্বাটে এবং পাতার বোঁটা সবুজ রঙের হবে। মাঠে প্রচলিত জাতের তুলনায় এর বৈশিষ্ট্য স্বল্প মেয়াদী এবং মধ্যম মাত্রার লবণাক্ত (১২ ডিএস/মি.) সহিষ্ণু জাত। এছাড়া এ জাতটি হলুদ মাকড়ের আক্রমণ সহিষ্ণু এবং তিন ফসলি জমিতে চাষের উপযোগী। বৃষ্টির পানি জমে না ও আষাঢ় মাসের আগে বন্যার পানিতে ডুবে না এরকম মধ্যম নিচু জমিতে নতুন এ জাতের পাট চাষ করা যাবে। পাট পচানোর জন্য জাঁক দেওয়ার সুবিধায় কাছাকাছি পরিষ্কার পানি পাওয়া যায় এরকম জমি নির্বাচন করা উচিত।

এ জাতটি চৈত্র মাসের ১ম সপ্তাহ হতে বৈশাখের ২য় সপ্তাহ (১৫ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল) পর্যন্ত বপন করা যায়। তবে উত্তম সময় চৈত্রের ১ম সপ্তাহ থেকে ৩য় সপ্তাহ পর্যন্ত। এ জাতে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ কম। তবে গাছের রোগ বালাই দেখা দিলে ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।

একে/এমএইচএস