দেশে প্রতি বছর কর্মক্ষম নারী ও পুরুষ যুক্ত হচ্ছে ২০ থেকে ২২ লাখ। তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে না পারলে বাড়বে বেকারত্ব। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক চাকরির পাশাপাশি প্রয়োজন উদ্যোক্তা তৈরি করা। কৃষিতে তরুণদের আগ্রহ বাড়াতে এবং উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে ‘কৃষি উদ্যোক্তা ফাউন্ডেশন’ গঠন করা হবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ) আয়োজিত ‘বৈরী আবহাওয়ায় কৃষিজ উৎপাদন : অস্থিতিশীল বৈশ্বিক কৃষি পণ্যের বাণিজ্য’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি উদ্যোক্তা ফাউন্ডেশনের ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি জানান, উদ্যোক্তাদের কল্যাণে দ্রুত এ ফাউন্ডেশন গড়ে তোলা হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে, দেশের কৃষিকাজ এখন তারুণ্যনির্ভর। কৃষিকাজে জড়িতদের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশই ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী। তরুণদের এ অংশগ্রহণের ফলে কৃষিকাজেও আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তরুণ উদ্যোক্তাদের চ্যালেঞ্জও কম নয়। বাধা পেরিয়েই এগোতে হচ্ছে তাদের। নীতিমালা না থাকা, ব্যাংক ঋণ পেতে ভোগান্তি, সরকারি প্রণোদনার ঘাটতিসহ নানা রকম বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কৃষি উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করতে এ ফাউন্ডেশন গঠনের বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। দেশে প্রতি বছর কর্মক্ষম ২০ থেকে ২২ লাখ তরুণ যুক্ত হচ্ছে। তাদের কর্মসংস্থান অনেকটাই অনিশ্চিত। এ পরিস্থিতিতে তরুণদের কর্মসংস্থানের অন্যতম মাধ্যম হতে পারে কৃষি। মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, কৃষি উদ্যোক্তা ফাউন্ডেশন তৈরি করলে তরুণদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে উদ্যোক্তা তৈরিতে কৃষি মন্ত্রণালয় নানা রকম সহায়তা দেবে।

এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কৃষি উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করতে কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষি উদ্যোক্তা ফাউন্ডেশন গঠন করতে কাজ করছে। এখন কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি ও তাদের উৎসাহিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সারাদেশে কৃষি উদ্যোক্তারা কে কোন ফসল চাষ করবেন, কোন ধরনের কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করবেন, তাদের কী সহযোগিতা দরকার- এসব বিষয়ে দেখভাল, সহযোগিতা ও যোগাযোগ রক্ষা করবে এ ফাউন্ডেশন।

এসিআই এগ্রিবিজনেস প্রেসিডেন্ট ড. এফএইচ আনসারী বলেন, আমাদের দেশে কৃষি উদ্যোক্তা ফাউন্ডেশন তৈরি করা দরকার। ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ঋণ দিতে পারলে দেশের যুবক এবং তরুণ ছেলে-মেয়েরা কৃষি উদ্যোক্তা হয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। ফলে দেশের বেকার সমস্যা দূর হবে। অনেক তরুণকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্থ সহায়তা দিতে পারলে তারা ফলের বাগান, মুরগির খামার, গরুর খামার, মাছের খামার করতে সক্ষম হবেন। 

সংলাপে বক্তারা বলেন, যদি ফাউন্ডেশন গঠন করা যায়, তবে দেশের কৃষি উদ্যোক্তারা সেখান থেকে ঋণ নিতে পারবে। ঋণ নিয়ে তারা তাদের কর্মসংস্থান করতে এবং টাকা রিটার্ন করতে পারবে। ঋণ নিয়ে উদ্যোক্তারা কৃষি যন্ত্রপাতি, বীজ, সার কিনে উৎপাদন করে সেখান থেকে লাভবান হবে। এক্ষেত্রে সরকারের পর্যাপ্ত নীতি সহায়তা প্রয়োজন। কৃষি খাতে আরও বড় সরকারি বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। দেশের ছোট ছোট উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ ও অন্যান্য সুবিধাদি সহজ করতে হবে।

এসআর