শুকনো সময়ে ঢাকার বাতাসে ধূলিকণা সাধারণত বেশি থাকে। বৃষ্টি হলে বাতাসে এর পরিমাণ কমে যায়। ধূলিকণা বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ। এর পরিমাণ কমে গেলে দূষণের মাত্রাও স্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার কথা।

শনিবার রাত থেকে ঢাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এ বৃষ্টিতে ঢাকার বাতাসে ধূলিকণা অর্থাৎ দূষণের মাত্রাও কমার কথা। কিন্তু তা ঘটেনি। বৃষ্টির দিন অর্থাৎ রোববার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আইকিউ এয়ার অনুযায়ী রাজধানীর বায়ুর মান ছিল ১৬০। বিশেষজ্ঞরা যাকে অস্বাস্থ্যকর বলে থাকেন।

রাজধানীতে সকাল ৮টায় বায়ুমান সূচক ছিল ১৭২, ১০টায় ছিল ১৬৮। এ অবস্থায় শিশু প্রাপ্তবয়স্ক এবং যাদের শ্বাসরোগ রয়েছে তাদের পরিশ্রম এড়ানো বা সীমাবদ্ধ করতে বলা হয়েছে। বায়ুর মান সন্তোষজনক অর্থাৎ ভালো বোঝায় সূচক যখন ৫০ এর কম থাকে।

যুক্তরাষ্ট্র ও সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার অনুযায়ী, গত ৫ নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ঢাকার বায়ুমান পরিস্থিতি ভালো নয়। নভেম্বরের ২৩ তারিখে বায়ুর মান ছিল ২৪৮, যা খুবই অস্বাস্থ্যকর। এছাড়া অন্যান্য দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ মান ছিল ১৮১। এ প্রতিবেদন লেখার সময় (বিকেল ৪টা ২০ মিনিট) বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ছিল আটে। তখন পাকিস্তানের লাহোর প্রথম ও ভারতের দিল্লী দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল।

ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগে অস্থায়ীভাবে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছে। শনিবারও সারাদেশে কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে।

বৃষ্টির মধ্যেও ঢাকার বায়ু কেন এতটা অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠল— জানতে চাইলে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আহমাদ কামরুজ্জামান মজুমদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, যখন ব্ল্যাক কার্বন এবং ধুলোবালি তৈরি হয়, তখন আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে পারি, এসবের কারণে বায়ুর মান খারাপ হয়েছে। আরেকটি বিষয় আমাদের মাথায় রাখতে হবে, সেটি হচ্ছে গ্যাসের দূষণ। গ্যাসের দূষণ যখন তৈরি হয় তখন এটি অ্যাটমোস্ফিয়ারে থেকে যায়। ধুলোবালি যেমন সহজে সেটেল হয়ে যায়, গ্যাস দূষণ তত দ্রুত সেটেল হয় না।

তিনি আরও বলেন, ঢাকার বায়ুমান নির্ধারণের জন্য ১৮টি মাত্রার ওপর নির্ভর করা হয়। এই ১৮টির কোনো একটির মান যদি বেড়ে যায়, তখন তা গড় হিসাবে প্রভাব ফেলে। যখন বৃষ্টি বন্ধ হয় এবং গাড়ি চলাচল শুরু হয়, তখন বায়ুদূষণে গাড়ির যে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কন্ট্রিবিউশন, তখন তা দ্বিগুণ হয়ে যায়। এক কথায় বলতে গেলে এখন যে বায়ুদূষণ, তার পুরোটাই যানবাহনসৃষ্ট। 

এমএইচএন/আরএইচ