বিমানের সাবেক এমডি ড. আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল

এক বছর চার মাসের মাথায় বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) পদ থেকে সরানো হয়েছে ড. আবু সালেহ্ মোস্তফা কামালকে। 

বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে বদলি করা হয়েছে। পাঠানো হয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তরের ডিজি হিসেবে। তার জায়গায় নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন অতিরিক্ত সচিব মো. যাহিদ হোসেন।

প্রজ্ঞাপনে বিমানের এমডির বদলির কারণ ‘জনস্বার্থ’ উল্লেখ করা হলেও অনেকেই বলছেন সাম্প্রতিক বিমানের নানা ‘অনিয়ম’-এর কারণে বদলি হয়েছেন তিনি।

বিমানের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, চার কোটি টাকার বেশি খরচ করে কানাডার টরন্টোতে পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা, পাইলট নিয়োগে অনিয়ম, পরিকল্পনা অনুযায়ী নিউইয়র্ক, টরন্টো ফ্লাইট পরিচালনা করতে না পারা, দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের চাকরিতে বহাল করার মতো বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ড. আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল।

মূলত টরন্টো রুটে বারবার পরিবর্তন আনা ও পাইলট নিয়োগে অনিয়মই তাকে সরানোর মূল কারণ বলে জানা গেছে।

তবে একটি সূত্র দাবি করছে, বিমানের এ এমডি বেশ শৃঙ্খল ছিলেন। পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন মাহবুবকে চাকরিচ্যুত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন। বিমানে ‘ক্যান্সারের মতো পচনধরা অংশ কেটে ফেলা’র ঘোষণার মতো কঠোর সিদ্ধান্তের কারণে এমডিকে সরিয়ে দিতে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছিল। এ ছাড়া বিমানবন্দরে একের পর এক দুর্ঘটনার ঘটার পরিণতি হিসেবে বদলি হয়ে থাকতে পারেন এমডি।

বদলির প্রকৃত কারণ জানতে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের যোগাযোগ করা হলে সাড়া পাওয়া যায়নি। হজে থাকায় কথা বলতে পারেননি ড. আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল নিজেই।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব নেওয়া ড. আবু সালেহ্‌ মোস্তফা কামাল সর্বশেষ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অতিরিক্ত সচিব পদে কর্মরত ছিলেন। তার ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে জানা যায়, শিক্ষাজীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক (সম্মান) এবং একই বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পিএইচডি করেন মাশরুমের সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণসহ ফুড সেফটির ওপর।

গবেষণার নিদর্শনস্বরূপ ‘পুষ্টিসমৃদ্ধ মাশরুম জুস’ ও ‘মাশরুম-ড্রায়ার’ আবিষ্কারের জন্য ড. সালেহ্ দুটি পেটেন্টের অধিকারী হন। এমন অর্জন বাংলাদেশের সিভিল সার্ভেন্টদের মধ্যে আর কারো নেই। এ ছাড়া, তিনি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের শুদ্ধাচার পুরস্কার লাভ করেন। একাদশ বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের এ সদস্য মানিকগঞ্জ, দৌলতপুর, কোটালিপাড়া, মধুখালী, ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ে পরিচালক (হজ) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

এআর/আরএইচ