বিমানে বোমা থাকলে পরিস্থিতি কেমন হবে, যাত্রীদের কীভাবে নিরাপত্তা দিয়ে সরিয়ে আনতে হবে— এ বিষয়ে মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রপ্তানি কার্গো ভিলেজ টারমার্কের সম্মুখে এ মহড়ার আয়োজন করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

মহড়া অনুষ্ঠানের পর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মুফিদুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সময়ে এভসেক সদস্যরা ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) দিকনির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মহড়া বাস্তবায়ন করেছেন। আমাদের অংশীজনদের প্রস্তুতি দেখে আমি খুবই আনন্দিত। প্রস্তুতি ছাড়া কোনো কিছু সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার প্রশিক্ষণ ও মহড়া। সিভিল এভিয়েশনের নির্দেশনা হচ্ছে, প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে মহড়ার মাধ্যমে সক্ষমতা নিশ্চিত করা। আজ আমার কাছে ভালো লাগছে মাত্র ৫০ মিনিটের মধ্যে আমরা শেষ করতে পেরেছি। সবাই সম্মিলিতভাবে দ্রুত কাজ করেছেন বলে আজ পরিস্থিতি দ্রুত মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৫ সালে আমাদের বিমানবন্দরে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। জাপান এয়ারলাইন্সের একটা বিমান হাইজ্যাক দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়। ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে।

এম মুফিদুর রহমান বলেন, আইকাও’র কিছু গাইডলাইন রয়েছে। আমরা বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় যে ব্যবস্থা নেব সেটা আইকাওয়ের নির্দেশনা মতো হচ্ছে কি না। মহড়ার প্রথমে আপনারা শুনেছেন, যারা অংশীজন আছেন তাদের এ বিষয়ে অবহিত থাকতে হবে। কার কি কর্তব্য, তা নির্ধারণ করা থাকতে হবে। যেকোনো জরুরি মুহূর্তে মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করতে হবে। জনবলকে প্রশিক্ষিত করতে হবে। সবকিছু সুন্দরভাবে হয়েছে। বিমানে বোমা থাকলে দ্রুত যাত্রীদের সরিয়ে নিতে হবে। তারপর বাকি কাজ করতে হবে।

পুরো মহড়ার নেতৃত্ব দেন বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম। তিনি ছিলেন মহড়ার অন সিন কমান্ডার। আর ডেপুটি অন সিন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এভিয়েশন সিকিউরিটির পরিচালক উইং কমান্ডার শাহেদ আহমেদ খান।

মহড়ার বিষয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম বলেন, আইকাও’এর ১৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিমানবন্দরে হাইজ্যাক, অগ্নি নিরাপত্তা, বোমা হামলাসহ বিভিন্ন ঝুঁকি মোকাবিলায় সক্ষমতা প্রমাণে প্রতি দুই বছর অন্তর এ ধরনের মহড়া আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, মূলত জরুরি মুহূর্তে বিভিন্ন সংস্থা কত দ্রুত সময়ে আসতে পারে সেটিই প্রমাণ করার লক্ষ্যেই এই মহড়া। অপারেশন ঘোষণার পর বিভিন্ন সংস্থা বিমানবন্দরে অবস্থান নিয়ে নিজ-নিজ দায়িত্ব পালন করে। কিছু জিনিস এয়ারপোর্টের ভেতরে আগে থেকেই থাকে। যেমন— ফায়ারের গাড়ি আছে, অ্যাম্বুলেন্স আছে, ডাক্তার আছে। রানওয়ের ওপাশে বিমানবাহিনীর ফোর্স ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট আছে। এছাড়া সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশের ইউনিট আমাদের সাপোর্ট করবে। আজকের মহড়ার উদ্দেশ ছিল সময় দেখা। প্রত্যেক সংস্থার সমন্বয় ঠিক আছে কি না দেখা। সংস্থাগুলো দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারছে কি না দেখা। বিষয়গুলো নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা মহড়া করেছি। আমরা বিমানবন্দরে সক্ষমতা মাঝে মধ্যে রিভিউ করি। এ বিষয়টি শাহজালাল বিমানবন্দরের জন্য একরকম প্রযোজ্য, সিলেটের জন্য অন্যরকম ভাবে প্রযোজ্য।

এআর/এসএসএইচ/