করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় চলতি বছরের ১৩ মে থেকে বাংলাদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। ইউএইর দুবাই-শারজাহ ও আবুধাবি শহরে বাংলাদেশি প্রবাসীর সংখ্যা বেশি। এই রুটগুলোয় ফ্লাইট বন্ধ থাকায় প্রায় ৭ হাজার প্রবাসী দেশে আটকা পড়েন।

সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম জানায়, শিগগিরই বাংলাদেশের জন্য দ্বার খুলে দিচ্ছে ইউএই। তবে ফ্লাইটের ৬ ঘণ্টার মধ্যে র‌্যাপিড পিসিআর টেস্ট করে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট নিলেই কেবল যাত্রীদের আমিরাত ঢুকতে দেওয়া হবে। প্রবেশের বিধিনিষেধ সম্পর্কে ইউএইর পক্ষও থেকে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি। তবে বাংলাদেশে র‌্যাপিড পিসিআর টেস্ট করার কোনো ল্যাব না থাকায় বিপাকে পড়তে পারেন প্রবাসীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, অনেকগুলো দেশ চেয়েছে প্লেনে উঠার আগে যাত্রীদের টেস্ট করা হোক। এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এছাড়াও আমরা দ্রুত সময়ে র‍্যাপিড পিসিআর কেনার জন্য চেষ্টা করছি।

এদিকে করোনা টেস্ট নিয়ে বাংলাদেশের প্রবাসীদের বিভ্রান্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই এয়ারলাইন্স। সম্প্রতি ফ্লাইট পরিচালনার বিষয়ে দুবাইভিত্তিক এমিরেটস ও শারজাহভিত্তিক এয়ার এরাবিয়া বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সঙ্গে বৈঠকে বসে।

যাত্রী পরিবহনের বিষয়ে এমিরেটস বেবিচককে জানায়, র‍্যাপিড পিসিআর টেস্ট করলেই কেবল যাত্রীদের প্রবেশ করতে দেবে ইউএই। তবে এয়ার এরাবিয়া বলছে, যাত্রীদের অ্যান্টিজেন র‍্যাপিড টেস্ট করিয়ে ইউএই প্রবেশ করতে হবে।

তবে যে পদ্ধতিতে করোনা টেস্ট করানো হোক না কেন, আপাতত কোনটিরই ব্যবস্থা নেই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এমনকি টেস্টের ল্যাব স্থাপনের জায়গাও নেই সেখানে। তাই বিকল্প হিসেবে বিমানবন্দরের কাছাকাছি কোনো জায়গায় বা হোটেলে টেস্ট করানোর কথা ভাবছে তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইউএইতে প্রবেশ নিয়ে আমরা এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছি। এমিরেটস ও এয়ার এরাবিয়া দুই রকম কথা বলেছে। তবে আমিরাতের সিভিল এভিয়েশন থেকে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য পাইনি। পেলে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।

বিমানবন্দরে র‍্যাপিড টেস্টের পিসিআর ল্যাব বসানোর বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, টেস্টের জন্য এয়ারপোর্টে জায়গা করা কঠিন। কারণ এয়ারপোর্টের ভেতর তেমন খালি জায়গা নেই। এখানে যাত্রীদের টেস্টের ব্যবস্থা করলে বিমানবন্দর আরও ছোট হয়ে আসবে। অন্যান্য যাত্রীদের চলাচল বিঘ্নিত হবে। আমরা এয়ারপোর্টের বাইরে কাছাকাছি কোথাও করা যায় কি না, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। এয়ারপোর্টের সামনে কোনো হোটেল ভাড়া করে বা অন্য কোথাও করার বিষয়ে আমরা ফিজিবিলিটি চেক করছি। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরামর্শ নেওয়া হবে।

এআর/এসকেডি