জীবন বহমান নদীর মতো। বয়ে চলা সেই যাপিত জীবনটাই থমকে গিয়েছিল আচমকা। করোনায় দিশেহারা বিচ্ছিন্ন সেই বিশ্ব ফিরেছে ‘নতুন স্বাভাবিকতায়’। ওই পথ ধরেই আবারও চনমনে হয়ে উঠেছে মরুর শহর দুবাই। ২১ অক্টোবর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কাভার করতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে পা রাখার পর থেকেই দেখছি চারপাশে যেন উৎসবের আমেজ। বিশ্বকাপ শেষ, কিন্তু এখনো চলছে দুবাই এক্সপো ২০২০ কিংবা গ্লোবাল ভিলেজ শপিং ফেস্টিভালের মতো বড় আয়োজন। এই দুই আয়োজনকে ঘিরে পর্যটকদের ভিড়টাও চোখে পড়ার মতো। এরসঙ্গে ৫ দিনের দুবাই এয়ারশো-২০২১ নিয়ে এখন বেশ উত্তাল দুবাই!

বিশ্বের হাজারো মেলা-প্রদর্শনী-ফেস্টিভালের ভিড়ে দুবাই এয়ারশো এক অনন্য আয়োজন। করোনার দুঃসময়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত যে এভিয়েশন শিল্প; তার ঘুরে দাঁড়ানোর বড় এক দৃষ্টান্ত এই আয়োজন। যা ১৪ নভেম্বর শুরু হয়ে শেষ হয় ১৮ নভেম্বর।


টিকিট কাটতে ৮৫ ডলার

সাধারণ কোন আয়োজন নয়, তবে এখানে সাধারণের ভিড় থাকছে বিষয়টি এমনও না। দুবাইয়ের এই এয়ারশো সবার জন্য উন্মুক্ত। কেবল যে জায়গাটুকু শুধুই বাণিজ্যিক আর পেশাদারদের জন্য, সেখানে প্রবেশাধিকার নেই ১৬ বছরের কম বয়সীদের। এটি মূলত ট্রেড শো, এ কারণে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত পেশাদাররাই এখানে প্রবেশ করতে পারছেন। তবে প্রবেশ করতে চাইলে ভিজিটর প্রতি খরচ করতে হচ্ছে ৮৫ ডলার। কোভিডের এই সময়ে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিটের ব্যবস্থা নেই দুবাইয়ে, অনলাইনে আগে টিকিট কেটে তবেই প্রবেশ করছেন আগ্রহীরা। 

তবে ‘স্কাই ভিউ’ অঞ্চল, মানে যেখান থেকে বিমান নিয়ে পাইলটদের নান্দনিক সব খেলা চলে, সেখানে যেতে পারেন যে কোনো বয়সীরাই। পুরো পরিবার নিয়ে গ্যালারিতে অবস্থান নেন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা। এখানে অবশ্য প্রবেশ মূল্য ছিল না!  দুবাই ও আবুধাবির মধ্যবর্তী আল মাকতুম বিমানবন্দরের পাশে ঠিক স্টেডিয়ামের আদলে করা হয়েছে গ্যালারি। মাথার ওপর ছাউনি নেই। গরমে সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার জোগাড়। তবুও আনন্দের কমতি নেই!

নতুন ২০ দেশের সঙ্গে ইসরায়েল

আরবদের সঙ্গে প্রকাশ্যেই সখ্য গড়ে উঠেছে ইসরায়েলের। এই পথ ধরেই এবার দুবাই এয়ারশো-তে দেখা মিলল ইসরায়েলের প্যাভিলিয়ন। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সেই প্যাভিলিয়নে ভিড়ও বেশ। শুধু ইসরায়েল নয়, নতুন যুক্ত হয়েছে চেক প্রজাতন্ত্র, বেলজিয়াম, ব্রাজিল ও স্লোভাকিয়া। প্রায় ১৫০টি দেশ যুক্ত হয়েছে এবারের শোটিতে। যেখানে রয়েছে ২০টি দেশের প্যাভিলিয়ন। ১৪০ দেশের প্রতিনিধি ছাড়াও প্রদর্শক রয়েছেন ১২০০ জন।

মোট ৮০টি স্টার্টআপ, আর ডিসপ্লে হিসেবে রাখা হয়েছে ১৬০টি বিমান। যে বিমানগুলোর দরজা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। বিশ্বের সেরা ব্র্যান্ডের সেই সব বিমানের ভেতরটা ঘুরে দেখার সুযোগও পাচ্ছেন সবাই। বিশ্বের নামকরা সব বিমান দাঁড়িয়ে এক সারিতে। দেখা মিলল বোয়িং সিএইচ ৪৭ চিনক, এমব্রায়েরেকেসি-৩৯০, দ্য ডাসোল্ট রাফায়েল, জাপানের কাওয়াসাকি সি-২, রাশিয়ান হেলিকপ্টার আনসাট, কেএ-৫২ ও এমআই-২৮ হেলোস এবং লিওনার্দো এডব্লু৬০৯। নজর কাড়ল রাশিয়ার সুখোই এসইউ-৭৫ চেকমেট। যেটি একেবারে নতুন পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান। আগ্রহীরা এই বিমানের সামনে ভিড় করলেন আর সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।  

এবারই প্রথম রাশিয়ার বাইরে সুখোই এসইউ-৭৫ চেকমেট বিমানটিকে প্রকাশ্যে আনা হলো। এ বছরের জুলাইয়ে খোদ রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিমানটি পরিদর্শন করে মুগ্ধ হয়েছিলেন। এই বিমানটি একসঙ্গে পাঁচটি বায়ু থেকে বায়ুতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে সক্ষম। এখানেই শেষ নয়, একসঙ্গে একাধিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে পারে এই যুদ্ধ বিমান।

এছাড়া আয়োজক সংযুক্ত আরব আমিরাত এয়ার ফোর্সের প্যাভিলিয়নে এফ-১৬ ফাইটার থেকে শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স বিভাগের সি-১৩০, জে-৩০, এফ-১৬ মুগ্ধতা ছড়াল। মুগ্ধজনরা সেই বিমানের সঙ্গে সেলফি তুলে আজীবনের স্মৃতি বানিয়ে রাখলেন। মূল আয়োজনে বিমান থেকে শুরু করে হেলিকপ্টার, ড্রোন এমনকি আকাশ যান রক্ষণাবেক্ষণে যেসব যন্ত্রাংশের প্রয়োজন সবকিছুরই ডিসপ্লে ছিল। আগ্রহীরা সেসব পণ্য সম্পর্কে জেনে অর্ডারও দিয়ে রেখেছেন।

দুবাই সিভিল এভিয়েশন, দুবাই এয়ারপোর্ট, ইউএই ডিফেন্স মিনিস্ট্রি ও টারসাস নামের একটি কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে হয়েছে এই আয়োজন। 

দুবাই এয়ার-শো’য়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান। বিশ্বের সেরা এয়ারলাইন্সগুলোর প্রতিনিধিদের এই আয়োজন থেকে অভিজ্ঞতা নিয়েছে বাংলাদেশও।

২৫৫ বিমান কেনার চুক্তি!

শুরুতেই এবারের এয়ারশোতে নজর কাড়ে এয়ারবাসের এ-থ্রি-টু-ওয়ান নিও এবং এ-থ্রি-টু-জিরো মডেলের বিমান। তার পথ ধরেই আকাশ যান বিক্রির বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়োজনের প্রথম দিনে এয়ারবাসের ২৫৫টি বিমান কেনার চুক্তি করে মার্কিন প্রতিষ্ঠান ইন্ডিগো পার্টনার। যে খবর মধ্যপ্রাচ্যের পত্রিকাগুলোতে এসেছে বেশ বড় করেই। 

মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং ও ইউরোপের বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাসসহ বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানির যাত্রীবাহী ও সামরিক বিমান সবার নজর কাড়তে নিয়েছে অভিনব উদ্যোগ। বাহারি সব প্রদর্শনী জানিয়ে দিচ্ছে কোন বিমান কেন। গগণবিদারি শব্দের বিমান যেমন আছে, আছে কম শব্দেরও। জ্বালানি ফুরায় কম আর কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কম হয় এমন বিমানের চাহিদাটা বেশি। বিমানের ভেতরটা ভ্রমণকারীদের জন্য আরামদায়ক পরিবেশ কি না সেটাও দেখে নিচ্ছেন অনেকে। প্যাভিলিয়নের কর্মীরা প্রাণান্ত চেষ্টায় সব বুঝিয়ে দিচ্ছেন। তাদের কথায় মনে হতে পারে এটা বিমান বিক্রির হাট!

এয়ারবাসের যাত্রীবাহী জেট এ-থ্রি-টু-ওয়ান নিউ মডেলের বিমানটি অনেকেই কেনার আগ্রহ দেখিয়েছেন। এয়ারশোর মিডিয়া বিভাগ জানাচ্ছে- হাঙ্গেরির বিমান সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান উইজ এয়ার, মার্কিন বিমান পরিবহন সংস্থা ফ্রন্টিয়ার এয়ারলাইন্স, চিলির জেটমার্ট ও মেক্সিকোর ভোলারিস'র সঙ্গে চুক্তি করেছে এয়ারবাস। বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ২০১৯ সালের চেয়েও এবার কমানো হয়েছে এয়ারবাসের দাম। এ কারণে বিশ্বের ছোট ও মাঝারি আকারের বিমান সংস্থাগুলো এয়ারবাসে বেশ আগ্রহও দেখাচ্ছে।

ভারতের স্টার্ট আপ আকাশ এয়ার আগামী বছরই আকাশে উড়বে। তার আগে এই প্রদর্শনীতেই মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং থেকে ৭২টি বিমান অর্ডার দিয়েছে তারা। সিঙ্গেল আই বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান দিয়ে যাত্রা করতে চায় ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি। এ নিয়ে চুক্তিও সেরে নিয়েছে দুই পক্ষ। বলা হচ্ছে অর্ডারটির মূল্য ৩.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

কোভিডের ধাক্কা সামলে এবারের প্রদর্শনীকে এখন অব্দি সফল মনে করেন জার্মানির প্যাভিলিয়নের কর্মী জেফ বেক। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ‘আমরা এবার নিয়ে ৩০ বছর ধরে এই প্রদর্শনীর সঙ্গে আছি। ১৯৯১ সাল থেকে এই মেলা থেকে যে অভিজ্ঞতা, সেটি আসলেই দারুণ। সিভিল এভিয়েশনের নানা বানিজ্য নিয়ে বেশ সাড়াও পাচ্ছি আমরা। আমাদের স্টার্ট আপ প্রজেক্ট এবার এখানে সাড়া ফেলেছে। সেরা স্টার্ট আপ কোম্পানির পুরস্কারটা আমরাই হয়তো পেতে যাচ্ছি।’

আয়োজকরা জানাচ্ছেন, এবারের দুবাই এয়ারশো-তে মোট ৩২ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি হতে পারে। যদিও তার ৫০ ভাগ চুক্তি হলেই আয়োজনকে সফল বলবেন বিশ্লেষকরা। 

পথচলার ৩৫ বছর

এটি সপ্তদশ দ্বি-বার্ষিক এয়ার-শো ইভেন্ট। অনেকের কাছে দুবাই এয়ারশোর নামটা অপরিচিত ঠেকলেও এই আয়োজনের পথচলা আজকের নয়। সেই ১৯৮৬ সালে শুরু বিমান আর অন্যসব আকাশ যানকে ঘিরে এই আয়োজনের। ১৯৮৬ সালে দুবাই ট্রেড সেন্টারে ছোট্ট করে যে পথচলার শুরু আজ তা বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই সাড়া ফেলেছে। 

সময়ের পথ ধরে এখন বেসামরিক বিমান শিল্পের জন্য একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছে দুবাইয়ের এই প্রদর্শনী। বিশ্বের নামকরা সব বিমান প্রস্তুতকারকরা এখানেই প্রথম তুলে ধরেন তাদের নতুন মডেলের বিমান। বিক্রিও হয় বেশ এই বাজার থেকে। এখানেই শেষ নয়, প্রাইভেট ও পাবলিক সেক্টরের কোম্পানি, নতুন নতুন প্রযুক্তি, সুযোগ এবং এই শিল্পের প্রতিবন্ধকতাগুলো নিয়ে এখানে প্রদর্শনীর প্রতিদিন হয় একাধিক সেমিনার। 

প্রতি দুই বছর পরপর বসে এই এয়ারশোর আনন্দ আয়োজন। পরিচালনায় থাকে দুবাই সিভিল এভিয়েশন, দুবাই এয়ারপোর্টস, দুবাই ওয়ার্ল্ড সেন্টার ও আমিরাত আমর্ড ফোর্সেস। ১৯৮৯ সাল থেকে এই আয়োজন দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করছে তারা।

কাজ করছেন হাজারো গণমাধ্যমকর্মী

পুরো আয়োজনটি বিশাল এক কর্মযজ্ঞ। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে কাভার করতে ছুটে এসেছেন সাংবাদিকরা। একেকজন সিভিল এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ। যেখানে হাজারেরও বেশি সংবাদকর্মী কাজ করেছেন। তাদের জন্য ভেন্যুর প্রথম তলায় করা হয়েছে সুবিশাল মিডিয়া সেন্টার। আধুনিক সব প্রযুক্তির ব্যবহারেরও দেখা মিলেছে সেখানে। ভেন্যুতে ক্যামেরার সামনে সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা নেই। এ কারণে মিডিয়া সেন্টারে দেখা মিলল গণমাধ্যমের সামনে কথা বলছেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে ইঞ্জিনিয়ার এমনকি নানা প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরা।

এয়ারশো-তে প্রতিদিনই প্রকাশ পায় একাধিক জার্নাল। শো ডেইলি ও ফ্লাইট ডেইলি নিউজ নামে ট্যাবলয়েড সাইজের দুটি ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয় প্রতিদিন। যেখানে প্রতিদিনকার খবরের সঙ্গে থাকছে ক্রয়-বিক্রয়ের একটা হিসাবও। এছাড়া সাক্ষাৎকার, বিমান পরিচিতি, ডিসপ্লের ছবি এয়ার শোর এ টু জেড পুরোটাই থাকছে।

মুগ্ধতা ছড়ানো ডিসপ্লে

দুবাই এমন এক শহর, যেখানে প্রতিটি ইঞ্চিই যেন পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে তৈরি হয়েছে। আর সেই প্রচেষ্টা বৃথা যায়নি। দুবাই এয়ারশোতেও একই দৃশ্যপট। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে চেষ্টার কোন কমতি নেই। বাহারি বিমানের প্রদর্শনী তো আছেই, গান পিপাসুদের জন্য ওপেন এয়ার কনসার্ট, খাবারপ্রেমীদের জন্য বাহারি সব আয়োজনও হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে উড়োজাহাজের এ্যারোবিক ডিসপ্লে!

চোখ ধাঁধানো ডিসপ্লে। গ্যালারিতে বসে মনোমুগ্ধকর সেই প্রদশর্নী দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন আয়োজকরা। আকাশ কাঁপিয়ে একেকটি বিমানের ডিসপ্লের সঙ্গে বিমান থেকে ছড়িয়ে পড়ছে বাহারি সব রঙ, বিস্ময়ে চিৎকার করে উঠছেন দর্শনার্থীরা। স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় দুবাইয়ের প্রচন্ড রোদ-গরম উপেক্ষা করে গ্যালারিতে বসতেই শুরু সেই নান্দনিক সব ডিসপ্লে। যেন বিমানকে নিয়ে ছেলে খেলা করছেন পাইলট। ইচ্ছেমতো ডিগবাজি দিচ্ছেন আকাশে। রোলার কোস্টারের মতো বিমানটাকে খেলনা বানিয়ে বিস্ময়কর সব আয়োজন।

যেখানে অংশগ্রহণ থাকল পাশের দেশ ভারতেরও। রীতিমতো দুবাই কাঁপিয়ে দিয়েছে ভারতের এয়ারফোর্স। তাদের অ্যারোবেটিক্স টিম এবং তেজস বিমানের প্রদর্শনী হাততালিও কুড়াল বেশ। বিমানের ওড়ার ক্ষমতা, চালচলন আর পরিচালনার ছন্দ মুগ্ধ করে দর্শকদের। শুধু ভারত নয়, অন্যসব দেশের অ্যারোবেটিক্স পারফরম্যান্সেও টানা তিন ঘণ্টা বুঁদ হয়ে থাকলেন দর্শকরা। 

সেই মুগ্ধতার কথা শোনালেন কেরালার তরুণ আরিফ শেখ। যিনি থাকেন আবুধাবিতে। অভিভূত এই ভারতীয় ঢাকা পোস্টকে বলছিলেন, ‘চোখের সামনে কী দারুণ সব ডিসপ্লে দেখলাম, বিশ্বাসই হচ্ছে না আমার। একটা বিমান নিয়ে আকাশে এভাবে খেলা যায়? মনে হচ্ছে সব যেন তাদের হাতের পুতুল। ৮৫ ডলার দিয়ে টিকিট কেটে এসেছি। সারা জীবনের জন্য দারুণ এক অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে যাচ্ছি।’

একদমই তাই, বিমানের এমন ডিসপ্লে সত্যিই অভূতপূর্ব। রাইট ভ্রাতৃদ্বয় মানে অরভিল রাইট আর উইলভার রাইট ওপারে থেকে নিশ্চয়ই আনন্দে মুচকি হাসছেন। যাদের উড়তে চাওয়ার প্রচেষ্টা, বাতাসের চেয়ে ওজনধারী মানুষ, তাদের বহনযোগ্য সেই উড়াল যান আবিষ্কার করা মার্কিন দুই ভাই যে পথ দেখিয়েছিলেন সেই পথে হেঁটে এখন মানুষ অসম্ভবকে জয় করেছে। না হলে এভাবে বিমান নিয়ে রোলার কোস্টার গেম খেলা যায়, জীবনটাকে হাতের মুঠোয় নিয়ে!

দুবাই এয়ারশো'র ঝিলিক সত্যিকার অর্থেই আনন্দ অভিজ্ঞতার অনন্য এক আয়োজন! 

এটি/এমএইচ/জেএস