বিমানবন্দরে কোনো বিমানে আগুন লাগলে কীভাবে, কখন, কে, কী পদক্ষেপ নেবে; সেই মহড়া করা হয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।

বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে এই মহড়া শুরু হয়। 

কোনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজে আগুন লাগলে কীভাবে তা মোকাবিলা করা হবে, সেজন্য প্রতি দুই বছর পর পর মহড়ার বিধান করেছে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা । বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরগুলোতে নিয়মিত এ ধরনের মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। 

মহড়ার জন্য বিমানবন্দরের ট্যাক্সিওয়ের পাশে রাখা একটি ডামি উড়োজাহাজে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রাত ১টা ১৭ মিনিটে ডামি উড়োজাহাজে আগুন লাগার খবর দেয় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ার। চার মিনিট পর রাত ১টা ২১ মিনিটে বিমানবন্দরের ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসে আগুন নেভাতে। একইসঙ্গে বিমান বাহিনীর ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও আসে। সেই সময় বিমান বাহিনীর একটি অস্ত্রধারী দল উড়োজাহাজটি ঘিরে রাখে। স্বাস্থ্য বিভাগের অ্যাম্বুলেন্স আহতের অভিনয় করা যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। গুরুতর আহতের ভূমিকায় অভিনয়কারীদের দ্রুত হাসপাতালে নিতে ঘটনাস্থলে আসে বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার। রাত ১টা ৪৩ মিনিটে মহড়া শেষ হয়।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ-উল আহসানের পরিচালনায় অগ্নিনির্বাপণ মহড়ায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী, র‍্যাব, আনসার, স্বাস্থ্য বিভাগ, কুর্মিটোলা হাসপাতাল, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ বিভিন্ন সংস্থা অংশ নেয়।

অগ্নিনির্বাপণ মহড়া অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার সনদ প্রাপ্তির লক্ষ্যে এই মহড়াটি আয়োজন করা হলেও এর অভিজ্ঞতা সকলের জন্য শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে। সত্যিকার দুর্ঘটনার সময় তা যথাযথভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হবে। বিমানবন্দরে কর্মরত সকল সংস্থার কর্মীদের যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও মোকাবিলা করার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার সাথে দেশের ভাবমূর্তি জড়িত। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো ধরনের আপস করা চলবে না। নিরাপত্তা বিঘ্নকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে দেশের সকল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বিমান দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের সকল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক মানের যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে দেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তাব্যবস্থা আগের থেকে অনেক উন্নত ও আধুনিক। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দেশের প্রধান বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দরের মাধ্যমেই দেশের সিংহভাগ মানুষ ভ্রমণ করেন। যাত্রীসেবার উন্নয়নে শাহজালালে তৃতীয় টার্মিনালের কাজ চলমান আছে, যা আমাদের সামনে দৃশ্যমান। নান্দনিক সৌন্দর্যের তৃতীয় টার্মিনালে অবকাঠামোগত সকল সুযোগ-সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। দেশি-বিদেশি যাত্রীরা এই টার্মিনালের মাধ্যমে ভ্রমণকালে পাবেন আন্তর্জাতিক মানের সেবা।

অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (রক্ষণাবেক্ষণ) এয়ার ভাইস মার্শাল সাদে উদ্দিন আহমেদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল, বেবিচকের সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এআর/এইচকে