শারীরিক প্রতিবন্ধী দুই ব্যক্তির কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়েও পছন্দের আসন বরাদ্দ না দেওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক কাতার এয়ারওয়েজকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার দীর্ঘ শুনানি শেষে এই রায় ঘোষণা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।

অধিদফতরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ২০২১ সালের ১৩ জুলাই ডা. মৃনাল কুমার সরকার নামে একজন চিকিৎসক তার পরিবারের দুজন বয়স্ক সদস্যের জন্য কাতার এয়ারওয়েজে কানাডা যাওয়ার টিকিট ক্রয় করেন। ওই দুজনের শারীরিক অক্ষমতা (ডিজেবিলিটিজ) থাকায় টিকিট কেনার সময় বিষয়টি উল্লেখ করেন চিকিৎসক মৃনাল। পাশাপাশি টিকিটের মূল্য ছাড়াও নির্দিষ্ট অতিরিক্ত ফি জমা দিয়ে ‘প্রিফার্ড’ সিট নেন তিনি। সিট নম্বরগুলো ছিল ১৬ডি ও ১৭সি। ওই দুজনের যাত্রার তারিখ ছিল ১৯ জুলাই। তবে সেদিন বিমানবন্দরে গেলে কাতার এয়ারওয়েজের চেক-ইনের কর্মকর্তারা সিট দুটি দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে অন্য সিট নিয়ে ওই দুই বয়স্ক যাত্রী কানাডা যান। 

এই ঘটনার পরেই কাতার এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে অভিযোগ করেন ডা. মৃনাল কুমার।

অভিযোগের ভিত্তিতে দুই পক্ষকে ডাকা হয় অধিদফতরে। শুনানি শেষে কাতার এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগটি প্রমাণিত হয়। তাই ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার দিন ১১ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) থেকে পরবর্তী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জরিমানার ২৫ ভাগ অর্থ পাবেন অভিযোগকারী।

জরিমানার বিষয়ে জানতে চাইলে কাতার এয়ারওয়েজের কেউ কথা বলতে রাজি হননি।

শুনানিতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে উপস্থিত হয়েছিলেন কাতার এয়ারওয়েজের আইনজীবী। তিনি অধিদফতরকে জানান, ভোক্তাকে (ডা. মৃনাল) বরাদ্দ করা সিট দুটি বাতিল করা হয়েছিল। তবে কারিগরি ত্রুটির কারণে ভোক্তা সেই বরাদ্দ বাতিলের নোটিশ/এসএমএস/ই-মেইল পাননি।

এর আগে, ২০২০ সালের ২৫ ডিসেম্বর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগীকে ঢাকায় আনার অপরাধে কাতার এয়ারওয়েজকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছিলেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

এসআই/এআর/ওএফ/জেএস