ঢাকা কলেজে বিক্রেতাবিহীন ‘সততা স্টোর’
ঢাকা কলেজে শিক্ষার্থীদের জন্য কলেজ প্রশাসনের উদ্যোগে চালু করা হয়েছে ‘সততা স্টোর’। এই স্টোরে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় নানা শিক্ষা উপকরণ, খাদ্য-পানীয় বিক্রির জন্য রাখা হলেও এখানে নেই কোনো বিক্রেতা, দোকানি বা সিসিটিভি ক্যামেরা। শিক্ষার্থীরা নিজেদের খেয়ালখুশি মতো প্রয়োজন অনুসারে পণ্য সংগ্রহের পর তালিকা দেখে সংরক্ষিত বক্সে দাম পরিশোধ করেন।
আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেল, কলেজের মূল ভবনের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের পাশেই সততা স্টোর স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে সাজানো রয়েছে খাতা, কলম, পেন্সিল, রাবার, মার্কার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, স্কেল, কেক, বিস্কিট, পানির বোতল, চকলেট, স্যালাইন, কোমলপানীয়সহ নানা ধরনের শিক্ষা উপকরণ।
বিজ্ঞাপন
কলেজ প্রশাসন জানায়, প্রাথমিকভাবে সকালে ক্লাস শুরুর পর থেকে দুপুর পর্যন্ত উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সততা স্টোর থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করতে পারছেন। পরবর্তীতে সকল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য এটা উম্মুক্ত করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের মাঝে সততার মূল্যবোধ সৃষ্টি করতেই এই উদ্যোগ। শুরুতে বিক্রেতা ছাড়া দোকান কিভাবে চলবে এবং শিক্ষার্থীরা পণ্য নিয়ে টাকা পরিশোধ করবে কি না এমন অনেক প্রশ্ন উঠলেও সপ্তাহ পেরুলে গরমিল হয়নি একটি টাকার হিসেবও।
বিজ্ঞাপন
ঢাকা কলেজের এই সততা স্টোরের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গঠন করা হয়েছে কমিটি। এতে পদাধিকার বলে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হয়েছেন অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার ও উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ.টি.এম. মইনুল হোসেন। আহ্বায়ক হিসেবে ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ার মাহমুদ, সদস্য হিসেবে ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের স্কাউট লিডার মোসাম্মৎ আয়েশা আক্তার ও ছাত্র প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের সিনিয়র রোভারমেট আসাদুল্লাহ গালিব ও রাকিবুল হাসান তামিম দায়িত্ব পালন করছেন।
১৭ মার্চ এই সততা স্টোরের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহরাব হোসাইন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ এবং ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও অন্যান্য শিক্ষকরা।
সততা স্টোর পরিচালনা কমিটির সদস্য ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের স্কাউট লিডার মোসাম্মৎ আয়েশা আক্তার বলেন, এখন পর্যন্ত স্টক রেজিস্টার অনুযায়ী সব ধরনের ভারসাম্য বজায় রয়েছে। একটি টাকাও কম-বেশি হয়নি। শুরুতে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিল আদৌ এই প্রকল্প সফল হবে কি না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস শিক্ষার্থীদের সততার ন্যায়-নিষ্ঠার প্রতিফলন এখানে ঘটছে। শিক্ষার্থীরা এর মধ্য দিয়ে ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ হবে।
ঢাকা কলেজের সততা স্টোর একটি ভালো কাজের দৃষ্টান্ত হিসেবে আলো ছড়াবে উল্লেখ করে অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, সততা স্টোর একটি ভাল কাজের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। শিক্ষার্থীদের মাঝে সততার অভ্যাস গড়ে উঠবে।
আরএইচটি/এনএফ