ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার নিয়ে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, খাবারের দাম বেশি হলেও মান খুবই খারাপ। পাশাপাশি নোংরা পরিবেশে খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। ফলে খাওয়ার সময় পোকা-মাছি ও শামুক পাওয়া যাচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক লালন শাহ হল, শহীদ জিয়াউর রহমান হল, শেখ রাসেল হল ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে। করোনায় বন্ধের আগে আবাসিক হলে খাবারের দাম ছিল ২২ ও ২৫ টাকা।

বর্তমানে লালন শাহ হলে তা বৃদ্ধি করে ২৫, ৩০ ও ৩৫ টাকা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া জিয়া হলে ২৫, ৩০ ও ৩৫ টাকা, বঙ্গবন্ধু হলে ২৫ ও ৩০ টাকা এবং রাসেল হলে ২৫ ও ৩৫ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। খাবারের দাম বাড়লেও মান বাড়ানো হয়নি বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া হলের এক ছাত্রী খাবারে মাছি পেয়েছেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধু হলেও এক ছাত্র খাবারে পোকা ও জিয়া হলে চিলা পোকা পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। এর আগে খাবারে টিকটিকি, চুল, শামুকসহ বিভিন্ন ধরনের পোকা পেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী। আবাসিক হলগুলোতে পঁচাবাসি খাবার দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। 

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রেজওয়ান বলেন, মূল্য বৃদ্ধি করা হলেও বাড়ানো হয়নি খাবারের মান। নিম্নমানের চাল এবং আধাপঁচা সবজি দিয়েই খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। বার বার প্রশাসনকে বলা হলেও তারা এ ব্যাপারে কোনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি।

লালন শাহ হলের শিক্ষার্থী তৌফিক বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকে কাজে লাগিয়ে হল ম্যানেজাররা খাবারের দাম নিজেদের খেয়ালখুশি মতো বৃদ্ধি করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদারকির অভাবে বাজারের সবচেয়ে খারাপ পণ্যটি নামমাত্র দাম দিয়ে কিনে হলে সরবরাহ করা হচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে এই অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে বিভিন্ন রোগে ভুগছে। এক্ষেত্রে হল প্রশাসনের সার্বক্ষণিক নজরদারি প্রয়োজন।

খালেজা জিয়া হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, খাবারের যে মান, তার ওপর মশা-মাছি-পোকা প্রায়ই পাওয়া যাচ্ছে। এসব অপরিষ্কার খাবার খেয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে হল ছেড়ে মেসে উঠছেন।

ডাইনিংয়ের ম্যানেজাররা বলছেন, ভর্তুকি অথবা খাবারের দাম না বাড়ালে হলের ডাইনিং ছেড়ে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।

প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল বলেন, হলগুলোতে খাবারের দাম নির্ধারিত রয়েছে। ম্যানেজাররা কিছু আইটেম বাড়িয়ে টেকনিক্যালি দাম বাড়িয়েছে। তাদের নিয়ে আজ বসেছিলাম। খাবারে আবর্জনার বিষয়ে তাদের সতর্ক করেছি।

রাকিব হোসেন/এসপি