ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অজ্ঞাত ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বুধবার (২৫ মে) ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী।

তিনি বলেন, অজ্ঞাত ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিস থেকে গতকাল মামলা করা হয়েছে। বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ মামলার এজাহার গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩০ জুন দিন ধার্য করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের ৩৫ জন শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন হচ্ছিল। এ সময় একদল দুষ্কৃতকারী লাঠি, রড ও নানা ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঢাকা মেডিকেলের বহির্বিভাগের সামনে এক জোট হয়ে নির্বাচন বানচাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত করতে অপতৎপরতা শুরু করে। বিষয়টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানালে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখান থেকে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, গত ২৪ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুনরায় শিক্ষা ভবনের সামনের দিক থেকে ৩০০-৪০০ জন দুষ্কৃতকারী কার্জন হলের গেট দিয়ে জোরপূর্বক প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় গেটের নিরাপত্তা প্রহরী কামাল হোসেন তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তার মাথায় লাঠি ও রড দিয়ে আঘাত করতে গেলে তিনি হাত দিয়ে তা ঠেকানোর চেষ্টা করেন। এতে তার হাত জখম হয়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের বহনে ব্যবহার করা দুটি বিআরটিসি বাস ভাঙচুর করে জাতীয় সম্পদ নষ্ট করা হয়।

অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, সন্ত্রাসীদের মূল টার্গেট ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ফোরাম সিনেট নির্বাচন বানচাল করা। কার্জন হলে কর্তব্যরত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকরমীকে আক্রমণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের প্রতিষ্ঠান (পাওয়ার স্টেশন) ভাঙচুর করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি মালিকানার শিক্ষার্থীদের দুটি বাসও ভাঙচুর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট ও ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে।

তিনি বলেন, সংঘর্ষে যারা ছিল তাদের ভিডিও ফুটেজ দেখে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের শনাক্ত করে আমাদের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে। পুলিশ তাদের তদন্তের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেবে। হামলাকারীদের মধ্যে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাদের বিরুদ্ধে আমরা একাডেমিক ব্যবস্থাও গ্রহণ করব। কে কোন রাজনৈতিক দলের সেটা বিবেচনা করা হবে না।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদূত হাওলাদার বলেন, গতকাল (২৪ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নষ্ট করা, সরকারি কাজে বাঁধা, নিরাপত্তা কর্মীদের মারধর, বাস ভাঙচুর করার অভিযোগে অজ্ঞাতনামায় তিনশ থেকে চারশ জনকে আসামি করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ একটি মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় গতকাল ২ জনকে আটক করে কোর্টে চালান করা হয়েছে।

এইচআর/আইএসএইচ