জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) চিকিৎসাকেন্দ্রের এক নার্সকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। শনিবার (৪ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ বলে জানিয়েছেন তার বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

এদিকে ঘটনার পরপরই বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা। বিক্ষুদ্ধ কর্মচারীরা প্রায় তিন ঘণ্টা চিকিৎসাকেন্দ্র তালাবদ্ধ করে রাখেন। এ সময় বন্ধ থাকে সকল চিকিৎসা কার্যক্রম।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম মো. মামুনুর রশীদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং শহীদ সালাম বরকত হলের আবাসিক ছাত্র।

ভুক্তভোগী নার্স বলেন, আজ সকাল ৯টার দিকে একজন শিক্ষার্থী র‌্যাবিস ভ্যাক্সিন নিতে আসেন। ভ্যাক্সিন দেওয়া শেষ হলে তিনি আমার শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন। প্রথমে আমি ভেবেছি অসচেতনতাবশত এটা হয়েছে। কিন্তু ভ্যাকসিন দেওয়া শেষে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আবার আমার কক্ষে এসে আমার শরীরে হাত দেন। তখন আমি চিৎকার করে পাশের ডাক্তার ও আমার সহকর্মীদের ডাকি।  উনারা এসে তাৎক্ষণিক ওই শিক্ষার্থীকে হেফাজতে নেন।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মামুনুর রশীদ অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, আমি ইচ্ছাকৃতভাবে এটি করেছি। 

তবে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিভাগের শিক্ষকদের দাবি- মামুনুর রশীদ দীর্ঘদিন মানসিক সমস্যায় ভুগছেন।

এ ব্যাপারে প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহবুবুল মোর্শেদ বলেন, ছেলেটি বেশ শান্তশিষ্ট বলেই জানি। তবে আমরা যতদূর জানি সে মানসিকভাবে অসুস্থ। আমরা তার পরিবারকে বিষয়টি জানিয়েছি। পরিবারের লোকজন ক্যাম্পাসে আসছেন। আমরা পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করব।

এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতি বিক্ষোভ করেছে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মেডিকেল তালাবদ্ধ করে রাখেন তারা।

কর্মচারী সমিতির সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, যে কোনো প্রক্রিয়ায় ওই শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। অন্যথায় আমরা আগমীকাল সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করব।

বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা শামছুর রহমান বলেন, আমরা চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি। শিক্ষার্থীও অভিযোগ স্বীকার করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। 

আলকামা/আরএআর