চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে অর্থ লেনদেনের অডিও ফাঁসের ঘটনায় জড়িত দুজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনায় উপাচার্যের পিএস খালেদ মেসবাহুল মোকর রবিনের পদাবনতি (ডিমোশন) ও কর্মচারী আহমদ হোসাইনকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৮তম এক্সট্রা অর্ডিনারি সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক কাজী ড. এসএম খসরুল আলম কুদ্দুসী। তিনি বলেন, সিন্ডিকেটে ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় জড়িত রবিনকে পদাবনতি ও কর্মচারী আহমদ হোসাইনকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এ ছাড়া ভিসি অফিস থেকে ফাইল হারানোর ঘটনার দিন উপস্থিত সবাইকে সতর্ক করে প্রশাসনিক ভবনের বাইরে বদলি করা হয়েছে।

জানা যায়, ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় পিএস রবিন ও আহমদ হোসাইনের পেছনে একটি চক্র জড়িত বলে তদন্ত কমিটি মনে করে। তবে এ বিষয়ে রবিন ও আহমদ হোসাইন মুখ খুলেননি। যার কারণে তদন্ত কমিটি তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা করার সুপারিশ করে। এ ছাড়া এই সুপারিশ সিন্ডিকেট কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। তবে কবে নাগাদ মামলা হতে পারে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।

প্রসঙ্গত, গত ৩ মার্চ ফার্সি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত তিনটি অডিও ফাঁস হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণি পদে ১২ লাখ, চতুর্থ শ্রেণি পদে ৮ লাখ, অফিসার পদে ১৫ লাখ ও শিক্ষক নিয়োগে ১৬ লাখ টাকার ওপরে লেন-দেন হয়েছে বলে অডিও ক্লিপগুলোতে উঠে আসে।

একটি কল রেকর্ডে প্রভাষক পদের এক প্রার্থীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পিএসকে অর্থ লেন-দেনের বিষয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলতে শোনা যায়। ফাঁস হওয়া সেই ফোনালাপে একজন আবেদনকারীকে উপাচার্যের একান্ত সহকারী খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীনকে বলতে শোনা গেছে। বাকি দুইটিতে উপাচার্যের ভাতিজা ও এক বিভাগীয় সভাপতিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব নিয়ামক শাখার এক কর্মচারীরও আর্থিক লেন-দেনের নানা বিষয়ে কথোপকথন শোনা যায়। 

এ ঘটনায় রবীনকে উপাচার্যের একান্ত সহকারী পদ থেকে সরিয়ে আগের কর্মস্থল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে বদলি করা হয়। একই সঙ্গে ফার্সি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করা হয়। 

রুমান/আরআই