উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্নকে সামনে রেখে এবার গুচ্ছের ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরিক্ষায় অংশ নিয়েছেন দৃষ্টিশক্তিহীন অদম্য তিন শিক্ষার্থী। তারিফ মাহমুদ চৌধুরী, তৃণা আক্তার সেতু ও আকাশ দাস জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন তারা। চোখে দেখতে না পারার প্রতিবন্ধকতাও তাদের দাবিয়ে রাখতে পারেনি উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্ন থেকে। 

শনিবার (১৩ আগস্ট) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় তারা পরীক্ষা দিয়েছেন।

এ সময় তাদের সহযোগী হিসেবে তিনজন ব্যক্তিকে নির্ধারণ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক মিতা শবনমের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষা দেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তারিফ মাহমুদ চৌধুরী জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন। রাজবাড়ীর বেগগাছি মুজাম্মেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালে এসএসসি ও ২০২১ সালে নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ঘ’ ইউনিটে পরীক্ষা দিয়ে পেয়েছেন হিসাববিজ্ঞান বিভাগে পড়ার সুযোগ। তবে এই বিষয়ে পড়তে ইচ্ছুক নন তিনি।

তারিফ মাহমুদের মা আফরোজা খান মজলিশ বলেন, তারিফ জন্ম থেকেই চোখে দেখে না। তবে সে পড়াশোনায় অত্যন্ত মনোযোগী। পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ অনেক বেশি।

একইভাবে অন্যান্যদের তুলনায় বিশেষ সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থী আকাশ দাস। তার বাড়ি নরসিংদী। জেলার কারারচর মৌলভী তোফাজ্জল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও মিরপুরের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। তার ইচ্ছা হলো একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া।

আরেকজন দৃষ্টিশক্তিহীন শিক্ষার্থী তৃণা আক্তার সেতু। তিনি এসেছেন গোপালগঞ্জ থেকে। লোহাচূড়া আলিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে পড়া শেষে ভর্তি হন মোকছেদপুর সরকারি কলেজে। এবার তিনি দ্বিতীয়বারের মতো ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। প্রথমবার কোথাও ভর্তির সুযোগ না পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো প্রস্তুত করেছেন নিজেকে।

তৃণার বড় ভাই সোহেল খান বলেন, জন্ম থেকেই আমার বোন দৃষ্টিহীন। তবুও ওর ইচ্ছাশক্তি ও মেধায় অদম্য।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক ড. মিতা শবনম বলেন, ‘এবার প্রথমবারের মতো এই তিনজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী বিশেষ ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা দিয়েছেন।’

এমএ