বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাককে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিতর্কিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক রহমত উল্লাহকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় বক্তব্য দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তবে শিক্ষকদের একটি অংশের প্রতিবাদের মুখে রোববার সেই আমন্ত্রণ বাতিল ক‌রে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে সভাপতিকে বাদ দিয়ে শুধু শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভূঁইয়াকে রাখা হয়েছে।

এদিকে, আগামী ২০‌ আগস্ট পদ্মা সেতু দি‌য়ে টু‌ঙ্গিপাড়া প‌রিদর্শনে যা‌বে আওয়ামী লীগ সমর্থক বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল। সেখা‌নেও উপাচা‌র্যের স‌ঙ্গে ড. রহমত উল্লাহকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে নীল দলের একাধিক সদস্যের আপত্তির মুখে সেই আমন্ত্রণও প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানা গে‌ছে। 

গত ৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সি‌ন্ডি‌কেট কর্তৃক সকল শিক্ষা কার্যক্রম ও প্রশাস‌নিক দায়িত্ব থে‌কে অব‌্যাহ‌তিপ্রাপ্ত ড. রহমত উল্লাহ‌কে হঠাৎ ক‌রে বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের নৈ‌তিকতা ক‌মি‌টির এক সভায় চি‌ঠি দি‌য়ে আমন্ত্রণ জানা‌নো হয়। ড. রহমত উল্লাহ সভায় উপস্থিত হ‌লে উপাচার্য তা‌কে জি‌জ্ঞেস কর‌লে তিনি জানান, চি‌ঠি দি‌য়ে আমন্ত্রণ তাকে জানানো হয়েছে। ড. রহমত উল্লাহ সভায় উপস্থিত হ‌লে প্রো-ভাইস চ‌্যা‌ন্সেলর (প্রশাসন) ড. মুহাম্মদ সামাদ সভাস্থল ত‌্যাগ ক‌রেন। ড. মুহাম্মদ সামাদ সভাস্থল ত‌্যাগ কর‌ার প‌রেও সভা চলাকালীন পুরো সময় ড. রহমত সভায় উপ‌স্থিত ছি‌লেন।

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে গত ১৭ এপ্রিল টিএসসি মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেখানে অধ্যাপক রহমত উল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসেবে বক্তব্য দিতে গিয়ে মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এক পর্যায়ে খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতিও ‘শ্রদ্ধা’ জানান বলে অভিযোগ ওঠে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ তাৎক্ষণিকভাবে ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান এবং তা এক্সপাঞ্জ করার দাবি জানান। পরে উপাচার্য আখতারুজ্জামান ওই বক্তব্যের অংশটুকু এক্সপাঞ্জ করেন।

পরে শিক্ষক সমিতি, নীল দল, ছাত্রলীগ, মু‌ক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন মহলের প্রতিবাদের মুখে মোশতা‌কের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দায়ে ড. রহম‌তকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে এ বিষয়ে অধ্যাপক রহমত উল্লাহ আদালতের দ্বারস্থ হন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে।

এইচআর/আরএইচ