সারা দেশের বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা জানি চা বাগানের চা শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে মজুরিসহ বিভিন্ন বৈষম্যের শিকার। দিনপ্রতি ন্যূনতম মজুরি ১২০ টাকায় তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে এই আন্দোলনের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের দাবি মেনে নিতে হবে এবং তাদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে।

তারা আরও বলেন, চা শ্রমিকরা যে ৩০০ টাকা মজুরি দাবি জানিয়েছে এটাও বর্তমান সময়ের সাথে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ১২০ টাকা তো নয়ই ৩০০ টাকা দিয়েও একটি পরিবার চালানো সম্ভব না। তবুও চা-বাগানের মালিকপক্ষ তাদের দাবি মেনে নিচ্ছে না। আজকে আমরা বলি বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই, আর চা শ্রমিকদের সাথে যা হচ্ছে তা বৈষম্য নয়, রীতিমত অন্যায় অত্যাচার। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের তিব্র প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। এই বৈষম্য দূর করতেই হবে।

মালিকপক্ষকে উদ্দেশ্য করে শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের দাবি বেশি না মাত্র ৩০০ টাকা মজুরি চায়। যারা চা বাগানের মালিক তাদের পরিবারের খবর নিয়ে দেখবেন একেকজন শত কোটি টাকার মালিক। এই শত কোটি টাকা এসেছে এই চা বাগানের শ্রমিকদের রক্তকে ঘামে পরিণত করে কঠোর পরিশ্রম করায়। তারা বেশি টাকা চায়নি, তাদের দাবি মেনে নিন। এই শ্রমিকেরা যদি আন্দোলন শুরু করে, তারা যদি কাজ বন্ধ করে দেয় তাহলে শত কোটি টাকা থেকে আপনাদের ফকির বানাতে বেশি সময় লাগবে না।

বর্তমান সময়ের জীবনযাপনের উপযোগী ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ এবং স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও চা মালিকেদের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

শ্রমিকদের সূত্রে জানা যায়, চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে চা-বাগানের মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা-সংসদের করা চুক্তি অনুযায়ী চা-শ্রমিকদের মজুরিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করা হয়। দুই বছর পরপর এ চুক্তি নবায়নের কথা। সর্বশেষ ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদন করা হয়। ওই চুক্তিতে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরে আর নতুন করে চুক্তি হয়নি। সম্প্রতি চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে চা-সংসদ মজুরি ১৪ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়। কিন্তু শ্রমিক নেতারা এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। শ্রমিকদের মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবি জানান তারা।

এইচআর/এমএ