সিলেটে আন্দোলনরত চা শ্রমিকদের দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে ঢাকাস্থ সিলেট বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২০ আগস্ট) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা ইংরেজ আমল থেকে চা শ্রমিকদের বঞ্চিত হওয়া ও সস্তা শ্রমের ইতিহাস তুলে ধরেন এবং অতি শিগগিরই তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সময়ে ১২০ টাকায় একজন মানুষের দিন চলতে পারে না। চা বাগানের মালিক গুটিকয়েক লোক তারা চা শ্রমিকদের জিম্মি করে ধনী হতে চায়। কিন্তু চা শ্রমিকদের জীবন নিয়ে তাদের কোন চিন্তা নেই। আমি চা শ্রমিকদের কাছে দাবি জানাবো, চা শ্রমিকদের দেশের নাগরিক হিসেবে, ভাই বোন মনে করে তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে চা শ্রমিক ভাইদের ঘরে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিন।

আরও পড়ুন: চা-শ্রমিকদের নতুন মজুরি ১৪৫ টাকা, কর্মবিরতি প্রত্যাহার

তারা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চা শ্রমিকদের ভোটাধিকার দিয়েছিলেন। চা শ্রমিক ভাইরা তা আজও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। তাদের বেতন যখন ৬০ টাকা ছিল, তা দ্বিগুণ করে দেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাই আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করতে পারি, এই সরকার চা শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি পূরণ করবে।

এর আগে শনিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের অফিসে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক বৈঠকে চা-শ্রমিকদের নতুন মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে শ্রমিকদের চলমান কর্মবিরতি প্রত‍্যাহারের ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি কর্মসূচি পালনকালে গত ১২ দিনের মজুরি, রেশনসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য সুবিধা প্রদানের দাবি জানান। 

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের পনেরো অক্টোবর বাংলাদেশ চা সংসদ(মালিকপক্ষ) এবং বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন কতৃক চুক্তি অনুযায়ী চা শ্রমিকদের  ‘এ’ শ্রেণির বাগানের জন্য দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা, ‘বি’ শ্রেণির বাগানের জন্য ১১৮ টাকা, ‘সি’ শ্রেণির বাগানের জন্য ১১৭ টাকা নির্ধারিত হয়।

চুক্তি অনুযায়ী বাজার দরের সাথে সংগতি রেখে মালিক পক্ষ ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে মজুরি বৃদ্ধির কথা থাকলেও উনিশ মাসে মজুরি বাড়ে নি। যার প্রেক্ষিতে, দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে সিলেট বিভাগের সব কয়টি চা বাগানের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছে এবং আন্দোলনে নেমেছে৷

এইচআর/এমএ