ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শিবির সন্দেহে ছাত্রলীগ কর্তৃক দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ ভবনের করিডরে এ ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন- দাওয়া অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ইকরামুল ইসলাম এবং আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের জামাল গাজী। শিবিরের সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের করিডরে শিবির সন্দেহে ইকরামুল ইসলামকে মারতে শুরু করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। প্রায় ৮-১০ জন ছাত্রলীগ কর্মী ওই শিক্ষার্থীকে মরধর করতে করতে কলাপসিবল গেট দিয়ে বের করে দেন। এরপর ওই শিক্ষার্থী চলে যান। পরে জামাল গাজীকে সাদ্দাম হোসেন হল থেকে অনুষদ ভবনে ডেকে নিয়ে শিবির সন্দেহে মারধর শুরু করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জামাল গাজী আতঙ্কে দৌড় দিলে পেছনে পেছনে টিএসসি পর্যন্ত দৌড়ানি দিয়ে আবারও অনুষদ ভবনে ফিরে আসেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। পরে ওই শিক্ষার্থী টিএসসির করিডর দিয়ে বের হয়ে যান। পরে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী অনুষদ ভবনের সকল শ্রেণিকক্ষে গিয়ে লাথি মারেন এবং শিবির সন্দেহ শিক্ষার্থীকে খুঁজতে থাকেন। তবে কাউকে না পাওয়ায় অনুষদ ভবন ত্যাগ করেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। এরপর ক্যাম্পাসসহ প্রশাসনিক ভবন শোডাউন দেন তারা। পরে জঙ্গিবিরোধী নানা স্লোগান দিয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল বের করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জামাল গাজী বলেন, দেড়টা পর্যন্ত আমার ক্লাস ছিল। ক্লাস শেষ করে মেসে যাচ্ছিলাম। সাদ্দাম হলের সামনে গেলে কয়েকজন আমাকে নাম-বিভাগসহ বিভিন্ন কথা জিজ্ঞেস করে। পরে অনুষদ ভবনের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর আরও কয়েকজন মিলে জিজ্ঞাসাবাদ করে। শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা জানতে চায়। কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বললেও আমার সঙ্গে মারমুখী আচরণ করেন। একপর্যায়ে দৌঁড়াতে বললে আমি ভয়ে দৌঁড়ে চলে যাই। কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও একটা সংগঠনের তকমা দিয়ে যেভাবে হেনস্তা করা হলো, আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমি ইসলামিক সাবজেক্টে পড়ি বলেই কি আমার সঙ্গে এমন আচরণ করবে।

ইবি ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, অনুষদ ভবনের কয়কজন শিক্ষার্থী অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে দলবদ্ধ ছিল। এ খবরে শিবির সন্দেহে তাদের ধাওয়া করা হয়। তবে মারধর করার বিষয়ে আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

রাকিব হোসেন/আরএআর