নীল আাকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা মেঘের ভেলা। নিচে তাকালেই হালকা মৃদু বাতাসে দুলছে কাশফুল। আর প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য নজর কাড়ছে যে কারো।

ঋতুচক্রের পরিক্রমায় বর্ষার পরেই আগমন ঘটে শরতের। বাংলাদেশকে বলা হয় ষড়ঋতুর দেশ। ছয় ঋতুর মধ্যে শরৎকাল একটি। শরৎকে বলা হয় প্রকৃতির রানী। শরতের সৌন্দর্যের উপমায় থাকে সাদা আকাশ আর শ্বেত রঙে মুগ্ধতা ছড়ানো কাশফুল। পথে-প্রান্তরে দেখা মেলে কাশফুলের। কাশফুল জানান দেয় শরৎ এসেছে।

প্রত্যেকটি ঋতু তার আলাদা বৈশিষ্ট্য ও অনুষঙ্গ নিয়ে আসে বাংলায়। শরতের সেই অনুষঙ্গ কাশফুল। নীল আকাশের সাদা-নীল মেঘের সঙ্গে কাশফুলের শুভ্রতায় মেতে ওঠে প্রকৃতিপ্রেমীরা। তাই তো কবি নির্মলেন্দু গুণ তার একটি কবিতায় লিখেছিলেন-‘শরত রানী যেন কাশের বোরখাখানি খুলে, কাশবনের ওই আড়াল থেকে নাচছে দুলে দুলে।’

প্রতিটি ঋতুতে ভিন্ন রঙে সাজে বাংলাদেশের অন্যতম সরকারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) ক্যাম্পাস। কখনো কৃষ্ণচূড়ায় লাল হয় বশেমুরবিপ্রবির পথ-ঘাট, কখনো কাঞ্চনের নীলাভ পাপড়ির ছোঁয়ায় সুভাসিত হয় ক্যাম্পাস, আবার কখনো শুভ্রতা ছড়ানো কাশফুলে শ্বেত হয়ে উঠে ক্যাম্পাসের মাঠঘাটসহ প্রতিটি জায়গা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় আবারো ভরে উঠেছে শুভ্রতার সৌন্দর্যে। শুভ্র কাশফুল হাতছানি দিয়ে ডাকছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। 

ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ রাস্তার দুপাশ, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, শহীদ মিনারের চারপাশ, কেন্দ্রীয় মসজিদের চারপাশ ও হল সংলগ্ন মাঠসহ বিভিন্ন চত্বর ভরে গেছে কাশফুলে। ক্যাম্পাসের চারপাশের কাশফুলের সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের আড্ডায় বারবার উঁকি দেয় শুভ্রতা ছড়ানো কাশফুল। 

শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি প্রায় দিন বিকেলে স্থানীয় অনেক দর্শনার্থী ঘুরতে আসছেন ক্যাম্পাসে। কাশফুলের সৌন্দর্যে বিমোহিত হচ্ছেন তারা। পশ্চিমা আকাশে সূর্য হেলে পড়তেই সাদা কাশফুলের বাগানে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা শুরু হয়। হালকা মৃদু বাতাসে কাশফুলের মাঝে তারা নিজেকে যেন হারিয়ে ফেলেন। সেই অনুভূতিগুলোকে ক্যামেরায় ফ্রেমবন্দি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন অনেকেই।

জেলা শহর থেকে কাশফুল দেখতে আসা তামিম বলেন, ফেসবুকে কাশফুল দেখে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এলাম। কাশফুল আমার খুবই পছন্দ। কাশফুল দেখলেই মনে পড়ে শরৎকাল এসেছে। তাছাড়া ক্যাম্পাসটি অনেক সুন্দর।

কাশফুলের সৌন্দর্যে বিমোহিত এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিটি ঋতুর সৌন্দর্যের ভিন্নতা এই বাংলায় ঘটে। আসে নতুন রঙ নিয়ে। শরতের কাশফুলের শুভ্রতায় ভরে উঠা ক্যাম্পাস যেন নতুন রূপে সেজেছে।

আরেক শিক্ষার্থী জান্নাতুল তাজরিয়া বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সৌন্দর্যের যেন কমতি নেই। নতুন ঋতু আসে, নতুন করে সাজে ক্যাম্পাস। শরতে কাশফুল ফোটে ক্যাম্পাসের মাঠঘাটসহ পথে-প্রান্তরে। তাইতো বিকেল হলে ছুটে আসি শুভ্রতা ছড়ানো ক্যাম্পাসে। ছুঁয়ে দেখতে মন চাই শুভ্রতার সৌন্দর্য। আর কাশফুলও যেন আমাদের হাতছানি দিয়ে প্রতিনিয়ত ডাকছে।

এসপি