ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিদেশি শিক্ষার্থী ও ফ্যাকাল্টি মেম্বারদের সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

শনিবার (২২ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গবেষণা-প্রকাশনা মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা জানান উপাচার্য।

অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থী ও ফ্যাকাল্টি মেম্বারদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পৃক্ত করার জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগের জন্য বিদেশি শিক্ষার্থীদেরও প্রবল আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু নানাবিধ জটিলতা আমাদের আছে। যার মধ্যে প্রধান সমস্যা হচ্ছে ভর্তি ক্লিয়ারেন্সের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘসূত্রিতা। যার কারণে জটিলতা কাটিয়ে এসে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে তারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। এই ধরনের জটিলতা দূর করা খুবই জরুরি।

তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি শিগগিরই আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে একটি অনুরোধ পত্র পাঠাবো। বিদেশি শিক্ষার্থীদের এদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার যে বিদ্যমান নীতি আছে তা যেন সংক্ষিপ্ত এবং সরল করা হয়। এটি যখন সহজ হবে বিশ্ববিদ্যালয় তখন নানাভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করে বিদেশি শিক্ষার্থীদের এই ক্যাম্পাসে আনয়নে উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারবে এবং সেটি কার্যকর হবে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক র‍্যাংকিংয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্যারামিটার। যখন বিদেশি শিক্ষার্থী ও ফ্যাকাল্টি মেম্বারদের অন্তর্ভুক্তির এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা নিশ্চিত করতে পারব তখন শিক্ষার মান আরও উন্নয়ন সম্ভব হবে।

উপাচার্য বলেন, আমাদের দেশে শিক্ষা ও সংস্কৃতি নীতিতে ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সম্পর্ক, কমিউনিটি অ্যাঙ্গেজমেন্ট, 
অ্যালায়েন্স, কোলাবোরেশন মারাত্মকভাবে অনুপস্থিত। বিষয়টি চিহ্নিত করে আমরা প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ, 
একাডেমিয়া ইন্ডাস্ট্রির সম্পর্কে জোর দিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন জ্ঞান সৃষ্টির পাশাপাশি বিতরণেরও উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের বিপুল সংখ্যক মৌলিক গ্রন্থ, জার্নাল, গবেষণা প্রকাশনা রয়েছে এবং চলমান রয়েছে। সেখানে কমিউনিটির সম্পৃক্ততা জরুরি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বর্তমান প্রজন্মকে সুদক্ষ কর্মীবাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের রপ্তানি খাতকে বহুমুখী করতে হবে। গবেষকদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য তিনি শিল্প মালিক ও অ্যালামনাইদের প্রতি আহ্বান জানান।

অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী কর্মদক্ষ ও যুগোপযোগী গ্র্যাজুয়েট তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এক্ষেত্রে একাডেমিক মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ফান্ড প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসার জন্য তিনি অ্যালামনাইদের প্রতি আহ্বান জানান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার। উদ্বোধন শেষে অতিথিরা মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।

উল্লেখ্য, এ মেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত প্রকাশনাসহ উল্লেখযোগ্য প্রকাশনাসমূহ (যেমন: গ্রন্থ জার্নালের বিশেষ সংখ্যা, গবেষণা প্রকল্প, পোস্টার, ফায়ার, ব্রশিয়ার) প্রদর্শন ও উপস্থাপন করা হবে। এছাড়া ৫৫টি গ্রন্থ, ২৬টি বিশেষ জার্নাল, ২১৬টি গবেষণা প্রজেক্ট, ৬২৪টি পোস্টার এবং ৮৬টি ফ্লাইয়ার/প্রুশিয়ার মেলায় স্থান পেয়েছে।


এইচআর/এমএ