রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্যাম্পাসে রাজশাহী-২ আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময় কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। 

গতকাল শনিবার রাবি শিক্ষার্থী শাহরিয়ারের মৃত্যুর ঘটনায় রামেকের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মানববন্ধনে রাবি শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করায় তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে রাবি শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৩ অক্টোবর) ফজলে হোসেন বাদশার এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা এই কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। এ সময় বিভিন্ন স্লোগনের মাধ্যমে কুশপুত্তলিকা পুড়ানোয় মেতে উঠেন শিক্ষার্থীরা। 

শাহরিয়ারের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ফজলে হোসেন বাদশা এমপির বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলছেন, দায়িত্বশীল চেয়ারে বসে এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়ে এমন বক্তব্য উনি দিতে পারেন না। উনি না জেনেই শাহরিয়ারের মাথার মগজ ঘটনাস্থলে পড়ে আছে বলছেন। কিন্তু শাহরিয়ার যেখানে নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হওয়া ছাড়া মাথা ফাটার কোনো চিহ্নই পাওয়া যায়নি। এমন উস্কানিমূলক বক্তব্যে আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা তার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে যতক্ষণ ক্ষমা না চাইবেন তাকে মতিহারের সবুজ চত্বরে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।

গতকাল মানববন্ধনে ফজলে হোসেন বাদশা তার বক্তব্যে বলেছিলেন, আমরা হাসপাতালের পক্ষ থেকে বলতে চাই। এটা প্রমাণিত যে ছেলেটি মারা গেছে। শাহরিয়ারকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তার পালস ছিল না এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে। এজন্য কোনো ডাক্তারের আর নতুন সার্টিফিকেট দেওয়ার দরকার নেই। হত্যা করে আপনারা এনেছিলেন। আর পরিবারকে হুমকি দিয়ে আপনারাই ডেডবডি নিয়ে গেছেন। ইউথ আউট পোস্টমার্টেম। আমরা হাসপাতালের পক্ষ থেকে মামলা ডায়ের করেছি। আমরা চাই যে পোস্টমর্টেম হোক, কবর থেকে ডেটবডি তুলে পোস্টমার্টেম করা হোক।

এর আগে তার এহেন বক্তব্যের প্রতিবাদে রোববার বেলা ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ২ ঘণ্টা ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন রাবি শিক্ষার্থীরা। এসময় নয় দফা দাবি জানান তারা।

এর আগে, গত বুধবার রাত ৮টার দিকে রাবির শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে শিক্ষার্থী এমজিএম শাহরিয়ার নামের এক শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত অবস্থায় রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রামেকে নেওয়ার ৩৫ মিনিট পর বিনা চিকিৎসায় আহত শাহরিয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রামেক হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডের সামনে ও পরিচালক কক্ষের সামনে ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা।

এসময় ইন্টার্ন চিকিৎসক, হাসপাতাল স্টাফরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। হামলায় ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের মাথা ফেটে গেছে ও আরেকজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। অন্যদিকে ইটার্ন চিকিৎসকদের দাবি রাবি শিক্ষার্থীরা তাদেরকে লাঞ্ছিত করেছেন।

এমএএস