সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের উপ-মানব উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও বনানী থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমাম হাসান শুভ

ইভটিজিং, হেনস্তা ও টাকা আদায়ের অভিযোগ এনে সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের উপ-মানব উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও বনানী থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমাম হাসান শুভসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বাঙলা কলেজের ভুক্তভোগী এক ছাত্রী।

অভিযুক্ত বাকিরা হলেন, সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান রাতুল (২৫), রাশেদুল ইসলাম সামি (২৪), মো. মেহেরাব হোসাইন ইকরাম (২৪) ও সৈকত সম্রাট। এই মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

রোববার (২৩ অক্টোবর) রাত ১১টায় ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আযম মিয়া। 

ওসি বলেন, সরকারি বাঙলা কলেজের হেনস্তার শিকার একজন ছাত্রী মামলার জন্য অভিযোগ জমা দিয়েছেন। আমরা যাচাই-বাছাই করে মামলা রেকর্ড করেছি। মামলা নম্বর ৩৪। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ও ৩৮৬ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। আইন অনুযায়ী আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।

আরও পড়ুন : ছাত্রলীগ : আদর্শিক রাজনীতির ধারক 

এজাহারে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, আমি সরকারি বাঙলা কলেজের ২য় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী। গত ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি কলেজের ২য় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে সরকারি তিতুমীর কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্রে যাই। পরীক্ষা শেষে আমি ও আমার বান্ধবী কলেজ মাঠে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। তখন ইমাম হাসান শুভ মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আমাকে উদ্দেশ্য করে জনসমক্ষে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল মুখভঙ্গিতে কথাবার্তা বলে উত্যক্ত করতে থাকেন, যা আমার জন্য মানহানিকর।

তিনি বলেন, এমন আচরণে আমরা যে যার বাসায় উদ্দেশে রওনা হই। আমার বান্ধবী চলে যাওয়ার পর আমি বাসায় যাওয়ার সময় মাঠের পাশে রাস্তায় আরেক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়। আমরা একসঙ্গে কলেজ থেকে বের হওয়ার মুহূর্তে ইমাম হাসান শুভ আবারও মোটরসাইকেলে এসে উত্যক্ত করতে শুরু করেন। তার মোটরসাইকেলের পেছনে বসা অজ্ঞাতনামা আরেকজনই আমাকে দেখে কটূক্তি ও উত্যক্ত করেন। 

আরও পড়ুন : ছাত্রলীগ নিয়ে এত সমালোচনা কেন? 

ওই ছাত্রী বলেন, পরে আমি ও আমার বন্ধু কলেজের বিজ্ঞান ভবনের সামনে পৌঁছালে তারা আবারো মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আমাকে উত্যক্ত করেন। এমন আচরণে আমি বিরক্ত হয়ে প্রতিবাদ করে মাটিতে পড়ে থাকা ছোট একটি ইটের টুকরা ইমাম হাসান শুভর মোটরসাইকেলের দিকে ছুড়ে মারি। এরইমধ্যে শুভর  সঙ্গে আরও অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জন পর্যায়ক্রমে যোগ দেন। এরপর তারা আমার বন্ধুকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকেন এবং আমার ছোড়া ইটের টুকরা তাদের মোটরসাইকেলে লেগে একাধিক স্থানে ক্ষতি হয়েছে দাবি করে মিথ্যা কথা বলতে থাকেন। এ সময় তারা ক্ষতিপূরণ হিসেবে আমার কাছে দশ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি শুভকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারমুখী আচরণ করতে থাকেন।

তিনি বলেন, এ সময় আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও তারা ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য বেপরোয়া আচরণ করেন। আমি নিরুপায় হয়ে আমাদের কাছে থাকা তিন হাজার টাকা দিই এবং আমি কোনো অপরাধ না করেও ক্ষমা চাইতে বাধ্য হই। তাদের এমন আচরণে আমি ভীত, শঙ্কিত। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং আশঙ্কা করছি তারা আবারো যেকোনো সময় আমার বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি করতে পারেন। তাই অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া একান্ত প্রয়োজন। 

আরএইচটি/আরএইচ