ঢাকা কলেজের কোনো শিক্ষার্থী আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকলে এর দায় নেবে না কলেজ প্রশাসন। এমনটি জানিয়েছেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ। রোববার (২৩ অক্টোবর) রাতে ঢাকা পোস্টের এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, কোন শিক্ষার্থী যদি আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে এর দায় ঢাকা কলেজ প্রশাসন নেবে না। পড়াশোনা করতে আসা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কলেজ প্রশাসন ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বদ্ধপরিকর। 

গত ১৯ অক্টোবর ঢাকা কলেজের সাত শিক্ষার্থী জিগাতলার একটি রেস্টুরেন্টে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটায়। এতে কলেজ প্রশাসনকে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। ওই ঘটনার জেরে সাত শিক্ষার্থীর অভিভাবক কলেজ বরাবর দেওয়া অঙ্গীকারনামায় সই করেন। 

অভিভাবকরা অঙ্গীকারনামায় লেখেন, আমাদের সন্তানরা ঢাকা কলেজের সব নিয়ম-কানুন মেনে চলবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপে সম্পৃক্ত হবে না। কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে তাদের নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করব এবং তাদের সব দায়-দায়িত্ব আমরা নেব। গত ১৯ অক্টোবর ঝিগাতলা পাঠান রেস্টুরেন্টের ঘটনার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরের কোনো অনভিপ্রেত ঘটনায় আমাদের সন্তানেরা জড়িত থাকলে আমরা এর জন্য দায়ী থাকব। কলেজ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে যেকোনো আইনগত ব্যবস্থা নিলে আমরা তা মেনে নিতে বাধ্য থাকব।

অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফ 

অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, কোনো শিক্ষার্থী যদি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অপ্রীতিকর ও অনভিপ্রেত ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকে, তার বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে এসব ঘটনায় জড়িতদের বিষয়েও কলেজ প্রশাসনের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।
 
তিনি বলেন, ঢাকা কলেজ দেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী একটি প্রতিষ্ঠান। স্বাধিকার আন্দোলনসহ দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে ঢাকা কলেজের অবদান অনস্বীকার্য। দেশবরেণ্য বিভিন্ন ব্যক্তিরাও এই কলেজের ছাত্র ছিলেন। তবে বর্তমানে কিছু শিক্ষার্থীর জন্য নানাভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আমরা তাদের বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব। আমি অধ্যক্ষ হিসেবে সবসময়ই চাই, ঢাকা কলেজে পড়াশোনার পরিবেশ বজায় থাকুক। বিশেষ করে উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য এখানে অবারিত সুযোগ রয়েছে। কোনোভাবেই এই পরিবেশ বিঘ্নিত হোক তা আমরা চাই না। তাই এখন থেকে সর্বোচ্চ কঠোরতা অবলম্বন করা হবে।

অঙ্গীকারনামার বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, হোস্টেলের যে শিক্ষার্থীরা ওই ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিল, আমরা তাদের সিট কেটে দিয়েছি। এই অঙ্গীকারনামা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বার্তা। ভবিষ্যতে কেউ যদি আবারো এ ধরনের কাজে যুক্ত হয়, তবে তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। 

সব ধরনের অনভিপ্রেত পরিস্থিতি ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী যেকোনো কাজ থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে চলতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।   

আরএইচটি/আরএইচ