প্রফেসর ড. আবুল কাসেম চৌধুরী

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাসেম চৌধুরী। বুধবার (১৬ নভেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোছা. রোখছানা বেগম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রফেসর ড. আবুল কাসেম চৌধুরী কৃতিত্বের সঙ্গে ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ থেকে স্নাতক এবং ১৯৮৮ সালে কৌলিতত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০১ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে থাইল্যান্ডের ক্যাসেটসার্ট ইউনিভার্সিটি থেকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। 

তিনি ২০০৩-২০০৫ সাল পর্যন্ত জাপান ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার ফর এগ্রিকালচারাল সায়েন্স, জাপানে পোস্ট ডক্টোরাল ফেলো হিসেবে মার্কার অ্যাসিস্টেড সিলেকশন বিষয়ে গবেষণা করেন। আন্তর্জাতিক (২৯টি) ও জাতীয় (২৪টি) পর্যায়ে বিভিন্ন জার্নালে তার ৫৩টি বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া প্রফেসর ড. চৌধুরী জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং থাইল্যান্ডের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তার গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

ড. আবুল কাসেম চৌধুরী ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক পরিচালিত পটুয়াখালী কৃষি কলেজের (বর্তমানে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন এবং দীর্ঘ ৩৪ বছর সুনামের সঙ্গে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ও গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন। 

সফল কর্মজীবনের অধিকারী প্রফেসর ড. চৌধুরী কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ এবং বায়োটেকনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান, কৃষি অনুষদের ডিন, পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টাডিজের ডিন, রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য, একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক, হল প্রভোস্ট, প্রক্টর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের প্রধান, রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক এবং শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী প্রফেসর ড. আবুল কাসেম চৌধুরী পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সহ-সভাপতি হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তার প্রচেষ্টায় ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রথমবারের মতো ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয় এবং উক্ত শোক দিবস কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। 

প্রফেসর ড. চৌধুরী ছাত্রজীবনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় এবং স্বৈরাচার বিরোধী ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী হওয়ায় তিনি ও তার পরিবার বিভিন্ন সময়ে স্বাধীনতা বিরোধীদের দ্বারা নিগ্রহের শিকার হন। তার বড় ভাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী হওয়ায় ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী থেকে চাকুরিচ্যুত হন।

প্রফেসর ড. আবুল কাসেম চৌধুরী ১৯৬২ সালের ১ অক্টোবর নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরফকিরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

মোহাম্মদ মিলন/এসপি