ঢাকা কলেজ ভেন্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তনের রিহার্সাল (মহড়া) অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এবং অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের ঢাকা কলেজ ভেন্যু ও ইডেন মহিলা কলেজ ভেন্যুতে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় ঢাকা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজের গ্র্যাজুয়েটরা ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসের ভেন্যুতে অংশগ্রহণ করেন।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এর নেতৃত্বে উপ-উপাচার্য, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সিনেট, সিন্ডিকেট, একাডেমিক পরিষদের সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক, অধিভুক্ত কলেজসমূহের অধ্যক্ষ, ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং গ্র্যাজুয়েটরা অংশগ্রহণ করেন।

তবে ঢাকা কলেজ ভেন্যুতে মহড়ায় ছিল না তেমন কোনো আমেজ। এলইডি স্ক্রিনে জুমের মাধ্যমে সরাসরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের মূল অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হলেও মহড়ার সময় গ্র্যাজুয়েটের সংখ্যা ছিল খুবই কম। ছিলেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রতিনিধি বা কলেজের শিক্ষকরা। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন উপস্থিত অনেক গ্র্যাজুয়েট। অনেকটাই নিষ্প্রাণ ছিল ঢাকা কলেজের এ মহড়া। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি তিতুমীর কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, আগের তুলনায় এ বছর আমেজ নেই বললেই চলে। সম্ভবত সাত কলেজের অনেক কম সংখ্যক শিক্ষার্থী এবার রেজিস্ট্রেশন করেছেন। মহড়ার জন্য আসলেও এখানে শিক্ষক বা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না। শুধুমাত্র আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরাই ছিলাম। তাও উপস্থিতি ছিল নগণ্য। হয়ত আগামীকাল সবাই আসবে তাই আজ আর কষ্ট করে কেউ আসেননি।

সাব্বির আহমদ নামে আরেক গ্র্যাজুয়েট বলেন, ছবির জন্য বুথ করা হয়েছে মাত্র দুটি। তাও ছোট ফেস্টুন। ফটোবুথ যদি আরও বড় করা হতো তাহলে সুন্দর হতো। ঢাকা কলেজ ভেন্যুতে আয়োজন অনেকটাই খাপছাড়া মনে হচ্ছে। তবে আগামীকাল সবার উপস্থিতিতে সমাবর্তন সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে বলে প্রত্যাশা করছি।    

এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কলেজ ভেন্যুর আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. মোহসেন উদ্দিন ফিরোজ বলেন, এসব বিষয়ে প্রশ্ন করলে আমরা বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ি। এ সবকিছুই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অথরিটি (কর্তৃপক্ষ) নিয়ন্ত্রণ করেন। মহড়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। এই ভেন্যুতে আমাদের ছেলেরা (শিক্ষার্থীরা) এসেছে এবং মহড়ায় অংশগ্রহণ করেছে।

শিক্ষকদের উপস্থিত না হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মূল আয়োজনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। এখানেই আমাদের শিক্ষক উপস্থিত হওয়া বা না হওয়ার বিষয়টি নয়। আমরা কলেজে সকাল থেকেই অবস্থান করছি এবং সমাবর্তন সফল করতে আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করছি। আমাদের সকল শিক্ষকরা প্রাণান্তকর চেষ্টা করছেন সমাবর্তন সফল করতে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তনে এবার অংশ নেবেন ৩০ হাজার ৩৪৮ জন গ্র্যাজুয়েট ও গবেষক। এর মধ্যে ২২ হাজার ২৮৭ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মূল অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত থাকবেন। আর অধিভুক্ত সাত কলেজের ৭ হাজার ৭৯৬ জন সমাবর্তনে অংশ নেবেন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজের মাঠ থেকে।

আগামীকাল শনিবার (১৯ নভেম্বর) এই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের শোভাযাত্রা এবং ১২টায় সমাবর্তন শুরু হবে। সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সভাপতিত্ব করবেন। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নোবেল বিজয়ী ফরাসী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. জ্যাঁ তিরোল।

আরএইচটি/এসকেডি