ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণা ভাতা, যাতায়াত ভাতা, ইনক্রিমেন্ট, টেলিফোন ভাতাসহ অন্যান্য পেশাগত সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এতে বলা হয়, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষকদের গবেষণা ভাতা বাতিলের একটি অনাকাঙ্ক্ষিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপনি জানেন যে, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের একমাত্র কাজ নয়, বরং বিদ্যমান জ্ঞানের বিকাশ এবং নতুন জ্ঞান সৃজনও তাদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। আর এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কোনো না কোনোভাবে গবেষণা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে হয়। শিক্ষকদের গবেষণা কাজের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ গবেষণা ভাতা চালু করেছিল।

এতে আরও বলা হয়, ‘শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময় এর পরিমাণও বৃদ্ধি করা হয়। যদিও গবেষণা কাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের তুলনায় গবেষণা ভাতার পরিমাণ ছিল যৎসামান্যই। তারপরও হঠাৎ করেই এটি রহিত করা হলো। শুধু তাই নয়, ইতোমধ্যেই ক্যাম্পাসের বাইরে বসবাসকারী শিক্ষকদের জন্য যাতায়াত ভাতা রহিত করা হয়েছে। লেকচারার হিসেবে যোগদানের সময় একজন শিক্ষককে যে সর্বোচ্চ চারটি ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা হতো সেটিও হ্রাস করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবসর গ্রহণের ক্ষেত্রে যে সেশন বেনিফিট সুবিধা ছিল তাও বাতিল করা হয়েছে। বিদেশে সেমিনারে অংশগ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত নির্ধারিত অনুদানও এখন বন্ধ রয়েছে বলে আমরা জেনেছি।’

নিন্দা জানিয়ে স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘শতবর্ষ অতিক্রমকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা ও গবেষণায় অনন্য উচ্চতায় প্রতিস্থাপন এবং এর বৈশ্বিক ব্যাংকিং বৃদ্ধির জন্য যখন নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে, সে সময় শিক্ষকদের জন্য পেশাগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি না করে বিদ্যমান সুযোগ সুবিধাসমূহ একের পর এক হ্রাস বা রহিত করা অযৌক্তিক এবং অন্যায্য বলে আমরা মনে করি। এ ধরনের সিদ্ধান্ত কেবল শিক্ষকদের জন্য আর্থিক ক্ষতিই নয়, অসম্মানজনকও বটে। এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা ও স্বায়ত্তশাসনের অবস্থানও ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তাই আমরা এসব সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।'

সাদা দলের দাবিগুলো হলো :

অবিলম্বে গবেষণা ভাতা পুনর্বহাল করা: ক্যাম্পাসের বাইরে বসবাসকারী শিক্ষকদের যাতায়াত ভাতা পুনর্বহাল করা, লেকচারার হিসেবে যোগদানের সময় একজন শিক্ষককে যে সর্বোচ্চ চারটি ইনক্রিমেন্ট প্রদানের বিধি চালু ছিল তা পুনর্বহাল করা; লেকচারার ও সহকারী অধ্যাপকদের জন্য টেলিফোন ভাতা পুনর্বহাল করা, শিক্ষকদের বিদেশে সেমিনারে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নির্ধারিত অনুদান প্রদান অব্যাহত রাখা, শিক্ষকদের বিদ্যমান কোনো সুযোগ-সুবিধা হ্রাস নয়, বরং ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা এবং  শিক্ষকদের বহুল প্রত্যাশিত স্বতন্ত্র বেতন স্কেল' প্রবর্তনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

স্মারকলিপি প্রদানকালে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক ইয়ারুল কবীর, অধ্যাপক আবুল কালাম সরকার, অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন, অধ্যাপক এম এ কাউসার, অধ্যাপক মো. নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক আবদুস সালাম, অধ্যাপক শাহ মোহাম্মদ এমরান, অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম শহীদ।

এইচআর/এমএ