জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) রিকশা ছিনতাইকালে অজ্ঞান পার্টির দুই সদস্যকে হাতেনাতে আটক করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা শাখায় হস্তান্তর করা হয়েছে। রোববার (৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টারজান এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার শামীম আহমেদ সোহাগ (৩২) ও সভারের কুটুরিয়া এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে মো. মামুন (৩৫)। 

ভুক্তভোগী রিকশাচালকের নাম শাহীন আলম (৪০)। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় ফুচকা বিক্রেতা রুবেল মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এর আগেও তিন দিন আমার দোকান থেকে ফুচকা কিনেছেন। ফুচকা কেনার পর ফুচকার সঙ্গে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে রিকশাচালককে অজ্ঞান করেন। এক রিকশাচালক রিকশা হারানোর পর আমার কাছে এসে অভিযোগ করেন। আজকে আবার যখন এক রিকশাচালককে নিয়ে ওরা আসে তখনই আমি বুঝতে পারি এবং ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের জানাই। শিক্ষার্থীরা তাদেরকে আটক করে রিকশাচালক ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় অজ্ঞান হয়ে পড়েন রিকশাচালক।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী তপু সুলতান বলেন, টারজান এলাকার রিকশাচালককে জুস খাওয়ানোর বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে সেখানকার চটপটি বিক্রেতা রুবেল মিয়া আমাদেরকে বিষয়টি জানান। ঘটনার সত্যতার জন্য রিকশাচালকসহ ওই দুই ছিনতাইকারীকে কিছু সময়ের জন্য পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। ২২ মিনিট পর রিকশাচালক বমি করেন এবং অজ্ঞান হয়ে যান। এর মধ্যে বিষয়টি নিরাপত্তা শাখাকে জানাই।

এদিকে ভুক্তভোগী রিকশাচালক অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। পরে অবস্থা গুরুতর বিবেচনায় তাকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ১১টা) সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

অভিযুক্ত শামীম আহমেদ সোহাগ দোষ স্বীকার করে বলেন, এর আগে জাহাঙ্গীরনগর থেকে একবার রিকশা ছিনতাই করেছি। আজকে দ্বিতীয়বারের মতো আসছি। জুসের সঙ্গে রিকশাচালককে চেতনানাশক ওষুধ খাওয়াই। এরপর সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তখন ক্যাম্পাসের ভাইয়েরা আমাদের ধরে ফেলে।

নিরাপত্তা শাখা সূত্র জানায়, গত মাসে ১৩ জন রিকশাচালককে অজ্ঞান করে রিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। বেশ কিছুদিন থেকে এই চক্রটি ছিনতাইয়ের কাজটি করে যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার প্রধান সুদীপ্ত শাহীন বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের জানালে অজ্ঞান পার্টির ওই দুই সদস্যকে নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসি। শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলকামা/আরএআর