মাঘের শীতে গরম পিঠার আমেজ ও হাতে তৈরি দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পিঠা নিয়ে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয়েছে পিঠা উৎসব। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী এই পিঠা উৎসবেরে আয়োজন করা হয়।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগ, আবাসিক হল ও অন্যান্য সংগঠন মিলে বাহারি পিঠার বৈচিত্র্যময় ২৮টি স্টল নিয়ে বসে। এসব স্টলে সারা দেশের ঐতিহ্যবাহী নানা ধরনের পিঠা দেখা যায়।

পিঠাগুলোর মধ্যে রয়েছে পাটিসাপটা পিঠা, সিজি পিঠা, ময়মনসিঙ্গা পিঠা, প্যারাবোলা পিঠা, উমম পিঠা, গোলাপ পিঠা, মালাই পিঠা, হৃদয়হরণ পিঠা, ডিম সুন্দরী পিঠা, বিবিখানা পিঠা, চালতা পাতা পিঠা, জামাই পিঠা, ননাস পিঠা, লবঙ্গ পিঠাসহ মজার মজার নামের বিভিন্ন পিঠা। এসব পিঠার নাম যেমন মজার, তেমনি দেখতে ও খেতেও অনেক সুস্বাদু।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিজ বিভাগের স্টলে নিজেদের অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী পিঠার পসরা সাজিয়ে বসে। এসময় দেখা যায় শিক্ষার্থীদের কেউ পিঠা তৈরি করছেন, আবার কেউ পিঠা বিক্রি করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও রংপুরের পিঠা-প্রেমীরা পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করছেন এসব পিঠার স্টলে।

আর এসব পিঠার গুণগতমান ও স্বাদ বিচারে মঞ্চে বসেছেন কয়েকজন বিচারক। উৎসব শেষে বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে পুরস্কার। এছাড়াও দিনব্যাপী আয়োজনের পুরো সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে পরিবেশন করা হচ্ছে লোকসংগীত, দেশীয় ও আঞ্চলিক গান।

স্টলে থাকা লুৎফা নাহার বর্ষা বলেন, আমাদের স্টলে রয়েছে টাঙ্গাইল জেলার উমম পিঠা, ময়মনসিংহের নকশি পিঠাসহ নানা স্বাদের পিঠা। আমরা এখানে আমাদের অঞ্চলের পিঠাগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

পরিসংখ্যান বিভাগের স্টলে থাকা ঝুমা আক্তার বলেন, আমাদের স্টলে নানা ব্যতিক্রমী পিঠা রয়েছে। রয়েছে মাছ পিঠা, লবঙ্গ পিঠা, ননাস পিঠা, রুটি দিয়ে বানানো মালাই পিঠা। এসব পিঠা বরিশাল ও ঢাকা অঞ্চলের। আমরা রংপুরে এসব পিঠা তৈরি করেছি যাতে এ অঞ্চলের মানুষ এ পিঠা সম্পর্কে জানতে ও স্বাদ নিতে পারে।

কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের স্টলে থাকা তামিম বলেন, আমাদের স্টলের স্লোগান হচ্ছে এখানে দক্ষ সিএসই ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা পিঠা বিক্রি করা হয়। এসব পিঠা আমরাই তৈরি করছি, আমরাই বিক্রি করছি। এরকম একটা আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।

পিঠা খেতে আসা রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান বলেন, দারুণ একটি আয়োজন। পিঠা খেতে অসাধারণ লাগছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাইম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বারের মতো পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। খুবই ভালো লাগছে। আজ আমরা ছোট-বড় সবাই একসঙ্গে ঘুরলাম, পিঠা খেলাম। প্রতিবছরই এরকম পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হোক।

পিঠা উৎসবের আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক উমর ফারুক বলেন, বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে এবং শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতেই আমাদের এ আয়োজন। আশা করি এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের মাঝে দেশের ঐতিহ্য সম্পর্কে নতুনভাবে উদ্দীপনা জাগাবে।

শিপন তালুকদার/এমজেইউ