পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতির ৯ দিন অতিবাহিত হয়েছে। এখনো কোনো সমাধানে আসেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে বর্তমান রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. মোহাম্মদ কামরুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি তুলেছেন পবিপ্রবির আন্দোলনরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

সোমবার পবিপ্রবির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্তের কাছে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর পক্ষ থেকে লিখিত দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, কর্মচারী পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু কর্মচারী পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতামতের ও দাবির ভিত্তিতে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টারের কর্মে অদক্ষতা এবং দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত প্রতিয়মান হওয়ায় ড. কামরুল ইসলামকে দ্রুত রেজিস্টার (ভারপ্রাপ্ত) থেকে অব্যাহত প্রদানের অনুরোধ করছি।’

জানা যায়, দাবি আদায়ে গত ৩১ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করে আসছে পবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। পরবর্তীতে তারা রোববার থেকে প্রতিদিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করছেন।

অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবিগুলো হলো- অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নে আপডেট কমিটির প্রতিবেদন রিজেন্ট বোর্ডের সভায় অনুমোদন, সহকারী রেজিস্ট্রার পদের স্কেল ষষ্ঠ গ্রেড এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদের স্কেল চতুর্থ গ্রেডে উন্নীত করা, অর্গানোগ্রাম কমিটিতে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি রাখা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে কর্মরত অভিযুক্ত দুর্নীতিবাজদের প্রশাসনের বাইরে বদলি, প্রতি অর্থবছরে তিনটি বাছাই বোর্ড এবং তিনটি রিজেন্ট বোর্ডের সভা আহ্বান করা।

অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল বলেন,‘ বিশ্ববিদ্যালয় সুন্দরভাবে চালাতে গেলে ও প্রশাসনিক কাঠামো ঠিক রাখতে যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তি প্রয়োজন। অযোগ্য ও অদক্ষ ব্যক্তিকে রেজিস্টারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে দেওয়া হয় তাহলে তিনি আইনকানুন না বোঝার কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি দাওয়া না বোঝায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারসাম্য নষ্ট হয়। তাই রেজিস্টারের অব্যাহতি চেয়েছি আমরা। এছাড়া আমাদের দাবিগুলো পূরণ না পর্যন্ত এই কর্মবিরোধী চলবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষার্থীরা কাজের জন্য গেলে কাউকে পাওয়া যায় না এবং প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা থাকে। আন্দোলনের শব্দের কারণে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পবিপ্রবির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. মোহাম্মদ কামরুল বলেন, ‘তারা একটা ৬ দফা দাবি দিয়েছিল আমার কাছে। সেটি আমরা গত ২৩ তারিখে রিজেন্ট বোর্ডের নীতিনির্ধারণী সভায় পাস করতে পারিনি, সেই কারণে তারা আন্দোলন ও কর্মবিরতি করছে। আমাদের ভাইস-চ্যান্সেলর সহ রিজেন্ট বোর্ডের সদস্যরা এর সমাধানের চেষ্টা করছি।’

আপনার অদক্ষতার কারণ তুলে রেজিস্ট্রারের পদ থেকে আপনার অব্যাহতি চেয়েছে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে জানি না তারা কেন আমার অব্যাহতি চেয়েছে।’

 বিষয়ে জানতে চাইলে পবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান মিলবে বলে আশা করছি।

মাহমুদ হাসান রায়হান/আরকে