ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই লক্ষ্য পূরণে আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকেও স্মার্ট হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, ছাত্রলীগকেও স্মার্ট হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানও। দায়িত্ব পাওয়ার পর তাদের এই ঘোষণার দুই মাস না যেতেই আনস্মার্ট কাজ করে নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আসে। ছাত্র সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের এই তৎপরতায় একাধিকবার অসন্তোষ জানিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংগঠনটির সর্বশেষ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানেও অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন পথযাত্রার সূচনার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও। এরপর সাদ্দাম-ইনানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ক্লিন ইমেজে ফিরবে বলে আশা করেছিলেন সবাই।

নির্দেশনা মানার চেয়ে অমান্যই বেশি করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গত একমাসে শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই এক ডজনের বেশি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন।

এর ধারাবাহিকতায় দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ২০ ডিসেম্বর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিতর্কমুক্ত ও স্মার্ট ছাত্রলীগ গঠনের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন বর্তমান সভাপতি-সম্পাদক। সে উদ্দেশ্যে সারা দেশের সব ইউনিটের উদ্দেশ্যে ১০ দফা সাংগঠনিক নির্দেশনাও দেন তারা।

অন্তঃকোন্দলে সংঘর্ষে জড়ানোর পাশাপাশি চাঁদাবাজি এবং ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

তবে, সে নির্দেশনা মানার চেয়ে অমান্যই বেশি করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গত একমাসে শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই এক ডজনের বেশি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন।

অন্তঃকোন্দলে নিজেরাই সংঘর্ষে জড়ানোর পাশাপাশি চাঁদাবাজি এবং ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের অভিযোগও উঠে সংগঠনটির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।

সংগঠনটির একাধিক সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিনে একের পর এক ছিনতাই ও চুরিকাণ্ড ঘটে চলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এর প্রায় সব কয়টিতেই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় থানায় অভিযোগ, মামলা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শাস্তির মুখেও পড়েছেন তারা। এমনকি দেশের অন্যতম শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামও হুমকির মুখে পড়ছে। তবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

সাম্প্রতিক সময়ে ঢাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

গত ১৫ জানুয়ারি রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক দম্পতিকে মারধর ও হেনস্তা করে স্বর্ণালংকার ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা হয় ছাত্রলীগ নেতা তানজির আরাফাত তুষার ও রাহুল রায়ের বিরুদ্ধে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের দুজনকেই সাময়িক বহিষ্কার করে।

এরপর নেতার আসন না পাওয়াকে কেন্দ্র করে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ। তিনদিন ধরে উত্তেজনা ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হওয়ার পর হলের নেতাদের ডেকে শান্ত থাকার নির্দেশনা দেন দলটির শীর্ষ নেতারা।

নেতাকর্মীদের কর্মকাণ্ডে দেশের অন্যতম শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামও হুমকির মুখে পড়ছে। তবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

৫ ফেব্রুয়ারি রাত ৩ টার দিকে রাজধানীর পলাশীতে অবস্থিত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে কাভার্ড ভ্যান আটকিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে না পেয়ে ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে দৌড়ে পালানোর সময় ঢাবির বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের দুই কর্মীসহ তিন ছাত্রকে আটক ও পরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এছাড়া গত ৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের কক্ষ দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের অনুসারীদের সঙ্গে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ২০ জন নেতাকর্মী আহত হন এবং হল ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমের কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি গাড়ি এক্সিডেন্টের জের ধরে ক্যান্সার আক্রান্ত ছেলে ও বাবাকে পিটিয়ে ক্ষতিপূরণের নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ফজলুল হক মুসলিম হলের একদল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় অভিযোগপত্র দায়ের করেন ভুক্তভোগী সেলিম মোল্লা।

এর আগে গত ৬ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শাড়িকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রলীগের দু'গ্রুপের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে ৪ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এছাড়া এক জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের এক নেতাকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করে হল প্রশাসন।

এছাড়াও গত ১ মাসের মধ্যে শিবির সন্দেহে দুই শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতন, টিএসসিতে দুই ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, কাওয়ালি গানের আড্ডায় যোগ দিতে আসা ছাত্র অধিকার পরিষদের এক নেতাকে মারধর, ক্যান্টিন কর্মচারীর মাথা ফাটানো, ছাত্র অধিকার পরিষদের সম্মেলনে বাধা, হেনস্তা ও নারী উত্যক্তের অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতন ও শিক্ষক হয়রানির খবরও গণমাধ্যমসূত্রে জানা যায়।

যদিও এসব ঘটনায় জড়িত কাউকে শনাক্ত করে কোন ধরনের সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেয়নি ছাত্রলীগ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, অপরাধীরা শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দিষ্ট অনুসারী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। এর ফলে অপরাধের মাত্রা বেড়েই চলেছে। এতে সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনটির।

অভিযোগ নিয়ে কী বলছেন ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা

ছাত্রলীগে উপদলীয় রাজনীতি করে নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়ানোর কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি করছেন ছাত্রলীগ নেতারা। তারা বলছেন, স্মার্ট ছাত্রলীগ ও স্মার্ট ক্যাম্পাসের অন্তরায় কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনা না করার স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এরপর কেউ যদি কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি একাডেমিক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হচ্ছে।

ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও সংগঠনের নাম ক্ষুণ্ণ হবে এমন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের প্রতি জিরো টলারেন্স রয়েছে। যারা এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনকেও অনুরোধ জানাব যেন তাদের বিরুদ্ধে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগে কারো অনুসারী কিংবা উপদলে বিভক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যারাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যক্রমে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে কেউ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়ালে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আইন ও নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি।

শিক্ষার পরিবেশ সমুন্নত রাখা ছাত্রলীগের নৈতিক ও সাংগঠনিক দায়বদ্ধতা বলেও উল্লেখ করেন ছাত্রলীগের শীর্ষ এ নেতা।

নেতাকর্মীদের এমন কর্মকাণ্ড স্মার্ট ছাত্রলীগ গঠনের অন্তরায় কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একাডেমিক পরিবেশকে সমুন্নত রাখা। এছাড়া আমরা যে স্মার্ট ক্যাম্পাসের স্বপ্ন দেখছি সেটি বাস্তবায়নকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে। আমাদের ছাত্র রাজনীতিকে স্মার্ট করতে হবে।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কর্মীদের রাজনীতিকে আদর্শিক লড়াই হিসেবে দেখতে হবে। প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তারের কোনো মাধ্যম হিসেবে ছাত্রলীগকে ব্যবহারের সুযোগ কারো নেই। আমরা যে স্মার্ট ছাত্রলীগের কথা বলছি, স্মার্ট ক্যাম্পাসের কথা বলছি সেটা যেন ক্ষুণ্ণ না হয় সে বিষয়ে আমাদের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি এর ব্যত্যয় ঘটায়, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে তাহলে তার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে আমাদের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যেসব ঘটনা ঘটছে। এসব নিয়ে আমরা দফায় দফায় কথা বলছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বসেছি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও কথা বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা রক্ষা করার জন্য জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়েছি।

দুই সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শাস্তির মুখে ১১৬ শিক্ষার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের নামে এ ধরনের অভিযোগ আসা লজ্জাজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ছাত্র সংশ্লিষ্টতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, গত দুই সপ্তাহে ১১৬ জনকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের তদারকি-টহল জোরদার করতে হবে। একইসঙ্গে এ ধরনের সন্ত্রাসীমূলক, অপরাধী কার্যক্রমে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে তড়িৎ ব্যবস্থা নিতে হবে। এ দুইটা পদ্ধতির মধ্য দিয়ে এসব অপরাধ কর্মকাণ্ড রোধ করা সম্ভব। এছাড়া তদারকি, মনিটরিং বাড়ানো ও যারা চিহ্নিত হবে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমাদের নির্দেশনা রয়েছে।

এইচআর/এমজে