আবাসিক হল খোলার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে শাখা ছাত্রলীগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেছেন, মহামারির ক্ষেত্রে আইন রয়েছে। এক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। কোনো প্রতিষ্ঠান বা এর অংশ বিশেষ কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, এই সময়ে প্রয়োজন হয় একটি জাতীয় সিদ্ধান্তের।

বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে আবাসিক হল খোলার দাবির বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে বৈঠকে একথা বলেন তিনি। উপাচার্যের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সেশনজটে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের জট কিছুটা কাটিয়ে তুলতে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু আবাসিক হল না খুলে এমন সিদ্ধান্তকে ‘অমানবিক ও অযৌক্তিক’ বলছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের সেই দাবি নিয়ে স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেয়ার দাবি জানায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।

বৈঠক শেষে গণমাধ্যমে দেওয়া ব্রিফিংয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিৎ চন্দ্র দাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে কারণে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ইতোপূর্বে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। যদি পরীক্ষা নিতেই হয় তাহলে অবশ্যই হল খুলে পরীক্ষা নিতে হবে, এটাই আমাদের দাবি। এক্ষেত্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের আইডি কার্ড দেখে হলে প্রবেশের অনুমতি দেয়া যেতে পারে। আর যদি হল খোলা সম্ভব না হয় তাহলে প্রশাসন যেন একটি যৌক্তিক শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো সমাধান খুঁজে বের করে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থী ভাই-বোনেরা যেন কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে না পড়ে। যারা পরীক্ষা দিবে তাদের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিবেচনা করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন উপাচার্য। আমরা আশা করি সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগ-অনুভূতি বিবেচনায় যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয়।

বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের মানবিক দাবির সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে আসেন। প্যানডেমিকের (মহামারি) কতগুলো ধরন রয়েছে। এটি সংক্রমক রোগ। এগুলোর ক্ষেত্রে কতগুলো আইন আছে, তাই এক্ষেত্রে অংশ বিশেষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না, কোনো প্রতিষ্ঠান পারে না, একটি জাতীয় সিদ্ধান্তের খুব প্রয়োজন হয়।

শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ছাত্রলীগের দেয়া দাবিগুলোর সঙ্গে সহমত জ্ঞাপন করে উপাচার্য বলেন, মহামারির সময়ে বাস্তবতা বিবেচনা করে বিচ্ছিন্নভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না। অনেক সময় সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও আমাদের সামগ্রীক বিচারে ভাবতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল কয়েকটি ছাত্রসংগঠন আমার কাছে এসেছিল। তারাও হল খোলার দাবি জানিয়েছে। আমি তাদেরকেও বলেছি, এটি বিচ্ছিন্নভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্র নয়। এতে জাতীয় ঝুঁকিও বৃদ্ধি পাবে।

গত রোববার উপাচার্যের কাছে হল খোলার দাবিতে স্মারকলিপি দেয় ছাত্রলীগসহ বেশ কয়েকটি ছাত্রসংগঠন। তাছাড়া গতকাল সোমবার থেকে হল খোলার দাবিতে রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।

টিএম