দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে একক অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে আন্দোলন করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।

শুক্রবার (২৪ মার্চ) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় এ শিক্ষার্থীকে। এসময় তার হাতে ‘বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি’ লেখা সম্বলিত একটি সাদা বোর্ড ও একটি চায়ের ফ্লাক্স দেখা গেছে।

মহিউদ্দিন রনি বলেন, গত ৫ মাস ধরে পড়াশোনার পাশাপাশি চা বিক্রির সুবাদে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার দরের ওঠা-নামা, অধিক মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকটে পড়ে মানুষের নাভিশ্বাস তোলা আহাজারি খুব কাছ থেকে দেখেছি। দেখেছি মূল্যসংযোজনের নামে সিন্ডিকেটের পাতা ফাঁদে পড়ে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত সব স্তরের শ্রেণি-পেশার মানুষজন কিভাবে বোকা হয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন।

ঢাবির এ শিক্ষার্থী বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির দায়ে সব উৎপাদন কাঁচামাল, পণ্য, সেবাও প্রচণ্ড ব্যয়বহুল হওয়ায় মানুষ বাধ্য হয়ে ঝুঁকছে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির মতো সব অনৈতিক কর্মের দিকে। চাল, ডাল, তেল, আলুসহ সব জিনিসের দাম বাড়ে, কই বাবার বেতন তো আর বাড়ে না! শিক্ষা সামগ্রীর দাম এত বেশি যে পড়াশোনাও এখন বিলাসিতা মনে হচ্ছে। হলে থাকি, ক্যান্টিনে খাই। তবুও এত দাম যেন পড়াশোনা করতে এসে বাবার ঘাড়ে হাতি তুলে দিয়েছি।

রনি বলেন, রমজান মাসে যেখানে পৃথিবীর সব দেশে দাম কমানোর প্রতিযোগিতা চলে। তার উল্টোরথে আমাদের দেশে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে চলে মানুষের গলাকাটার মহোৎসব। দেশে নীরব এ দুর্ভিক্ষের প্রতিবাদে আমি এখানে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছি। আপনারা যদি মনে করেন এ দাবি আপনারও, তাহলে আপনিও আমার পাশে বসতে পারেন। নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত আমি অবস্থান চালিয়ে যাব।

মহিউদ্দিন রনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। গত বছরের জুলাই মাসে টিকিট কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার পর ঈদুল আজহার আগে ৭ জুলাই থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে অনশন শুরু করেন তিনি। টানা ১৯ দিন সেখানে অবস্থান করার পর রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছয় দফা দাবি পূরণের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করে ঘরে ফিরে যান রনি।

এর আগে গত এপ্রিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোর্তজা মেডিকেল সেন্টার আধুনিকায়নসহ ৬ দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করে আলোচনায় আসেন এ শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করেন।

এইচআর/এফকে