শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমরা দেখেছি ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। যদি সরকার পরিবর্তনের উদ্দেশ্য থাকত তাহলে শুধু রাষ্ট্রপ্রধানকে হত্যা করলেই যথেষ্ঠ ছিল। কিন্তু আমরা দেখেছি তার পুরো পরিবারকেই হত্যা করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য একটাই- তা হলো বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে চিরতরে মুছে ফেলা।

রোববার (৪ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একজন মানুষকে হত্যা করতে একটা বুলেটই যথেষ্ঠ। কিন্তু তার পুরো বুকটাই ঝাঁজরা করে দেওয়া হয়েছিল। কতটা প্রতিহিংসা পরায়ণ হলে মানুষ তা করতে পারে। যারা সেদিন গণমানুষের বিপক্ষে ছিল তারাই বঙ্গন্ধুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

তিনি বলেন, ইতিহাসবোধ যেকোনো মানুষের জন্য খুব জরুরি। আমরা ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখেছি যেদিন পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে সেদিন থেকেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলার কথা ভেবেছেন। কারণ তিনি জানতেন পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা বাঙালির জন্য কোনো স্বাধীনতা নয়। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের সময়কালে পুরো ২৩ বছর স্বাধীন বাংলার জন্য চিন্তা করেছেন এবং পর্যায়ক্রমে স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে এগিয়ে গিয়েছেন।

শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেটের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেট বাড়ানো অবশ্যই দরকার। কিন্তু শুধু বাজেট বাড়ানোই যথেষ্ঠ নয়। সেই বাজেটকে ব্যবহার করতে পারার জন্য দরকার সুষ্ঠু শিক্ষানীতি ও আদর্শ শিক্ষক। শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেট বৃদ্ধির জন্য শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ই যথেষ্ট নয়, এক্ষেত্রে যাবতীয় সব বিষয় হিসেব করলে আমরা দেখি মোট ২৯টি মন্ত্রণালয় এর পেছনে কাজ করে।

এদিন দুপুর ১২টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সেমিনারের আনুষ্ঠানিকতা। অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য ও ড. নাজনীন নাহার ইসলামের সঞ্চালনায় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় এই সেমিনার। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন চবির প্রক্টর ড. নূরুল আজীম শিকদার।

এতে মুখ্য আলোচক হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চবির বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন।

আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী।

সেমিনার শেষে শিক্ষামন্ত্রী চবিতে নবনির্মিত একাডেমিক ক্ষেত্রে দেশের প্রথম অত্যাধুনিক সমুদ্র গবেষণা কেন্দ্র মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদ ভবনের উদ্বোধন করেন। সম্পূর্ণ অত্যাধুনিক এ অনুষদে একটি ইনস্টিটিউট ও দুটি ডিপার্টমেন্টে রয়েছে। এটি ৫৬টি কক্ষবিশিষ্ট ৫ তলা একাডেমিক ভবন। এছাড়া মেরিন একুরিয়াম ভবন এবং গবেষণার সুবিধার্থে সামুদ্রিক নানা পর্বের নানা গোত্রের প্রাণী আছে এই একুরিয়ামে। একুরিয়ামের পাশাপাশি একটি হ্যাচারিও রয়েছে এই অনুষদের অধীনে।

রুমান/আরএআর