আজ ৮ই জুন। সারাবিশ্বে প্রতি বছর এই দিনটিকে বিশ্ব সমুদ্র দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়। ‘প্ল্যানেট ওসিয়ান: টাইডস আর চেঞ্জিং’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি উদযাপিত হয়েছে। দিবসের এবারের লক্ষ্য হলো পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয়গুলো উদ্ঘাটন করা এবং সমুদ্র সম্পদের সংরক্ষণ ও সুরক্ষার জন্য সচেতনতা জাগ্রত করা। 

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) ঢাবির সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ ও ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান গভার্নেন্সের (আইসিওজি) উদ্যোগে র‍্যালি ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনে কারিগরি সহযোগিতা দিয়েছে জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন (জিআইজেড), ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক অ্যান্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউট (নোয়ামি) ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইইসিএন)। 

বিশ্ব সমুদ্র দিবসের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সমুদ্র সম্পদের টেকসই উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও সমুদ্র দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি সমস্যার সামগ্রিক সমাধানে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়। এছাড়াও এই দিবসের মাধ্যমে সমুদ্র সম্পদের গুরুত্ব ও পরিচর্যা নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি পায়।

দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে ঢাবির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘রিভেলিং দ্য পটেনশিয়্যাল অব ব্লু ইকোনোমি’। 

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সচিব) অধ্যাপক ড. মো. কাউসার আহাম্মদ, জিআইজেডের প্রিন্সিপাল অ্যাডভাইজার ড. স্টেফান আলফ্রেড গোইনেওউল্ড ও আইইউসিএনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. রাকিবুল আমিন। 

অনুষ্ঠানে নীল অর্থনীতি বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবির সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় চেয়ারম্যান ড. কে এম আজম চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশে নীল অর্থনীতির অপার সম্ভাবনা, ক্ষেত্রসমূহ, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, গবেষণা কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে মতামত ব্যক্ত করেন। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ যেমন বৈশ্বিক উষ্ণয়ন, জলবায়ুর পরিবর্তন, সমুদ্র দূষণ নিয়েও আলোচনা করেন। 

এসসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং নীল অর্থনীতির অমিত সম্ভাবনা কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে সবাইকে একসঙ্গে সংঘবদ্ধভাবে কাজ করার কথা বলেন তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশে সমুদ্র গবেষণা কার্যক্রমকে আর সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সেমিনারে বাংলাদেশে নীল অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিতে সমুদ্রবিজ্ঞান নিয়ে একটি উইং গঠন করার প্রস্তাব করা হয়।  

এছাড়া এই দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে ঢাবির কার্জন হল থেকে কাজী মোতাহার হোসেন ভবন পর্যন্ত একটি র‍্যালির আয়োজন করা হয়। ঢাবির সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দরা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুরসহযোগে র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।  

র‍্যালিতে জলবায়ু পরিবর্তন, প্লাস্টিক দূষণ, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, সমুদ্র সম্পদ সংরক্ষণ, জীববৈচিত্র্যের রক্ষণাবেক্ষণ, সমুদ্র হ্যাজার্ড ইত্যাদি বিষয়বস্তু নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া এই র‍্যালির মাধ্যমে সমুদ্র সম্পদের গুরুত্ব ও পরিচর্যা নিয়ে সবাইকে সচেতন হতে এবং এগিয়ে আসতে বলা হয়। 

র‍্যালিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। 

কেএ