জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ বলেছেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম ও বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের নজির মানব জাতির ইতিহাসে আর নেই। এ হত্যাকাণ্ড সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সেনা সদস্যের অংশগ্রহণে নিছক একটি হত্যাকাণ্ড ছিল না। এ হত্যাকাণ্ড ছিল দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের গভীর নীল নকশার অংশ। এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের মূল নায়ক ছিলেন জিয়াউর রহমান।’

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি আয়োজিত ‘১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড : খুনি কারা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ড. হারুন-অর-রশিদ। 

ড. হারুন-অর-রশিদ আরও বলেন, ‘১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল- যে আদর্শের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল, সেই আদর্শ থেকে সরে গিয়ে পাকিস্তানের আদলে সেনা-আমলা নির্ভর সাম্প্রদায়িক দেশে পরিণত করা। খুনি ডালিমের লেখা বই ও অপর খুনি ফারুকের আদালতে দেওয়া জবানবন্দি থেকে এটা সুস্পষ্ট যে, এ হত্যাকাণ্ডের প্রধান নেপথ্য নায়ক ছিলেন জিয়াউর রহমান। খুনিরা তার সঙ্গে অনেক আগে থেকেই যোগাযোগ রক্ষা করত। জিয়াউর রহমান ছিলেন উচ্চাভিলাষী এবং অত্যন্ত নিষ্ঠুর প্রকৃতির। তিনি শুরু থেকেই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘রশিদ-ফারুকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বিষয়ে যখন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করল, তখন তিনি তাদের এ বিষয়ে সম্মতি জানান এবং এগিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিপ অব স্টাফ এবং সেনাবাহিনীর একজন অফিসার হিসেবে তার দায়িত্ব ছিল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তথা সেনাপ্রধান এবং তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এ ষড়যন্ত্রের কথা জানানো। সেটা না করে তিনি বরং তাদের ‘গো অ্যাহেড’ বলেছেন। এটার মাধ্যমে তিনি যে ক্রাইম করেছেন, সে জন্য তার সর্বোচ্চ শাস্তি পাওয়া থেকে পরিত্রাণের অবকাশ নেই। তিনি যদি ওইদিন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তাদের ষড়যন্ত্রের কথা জানাতেন, তাহলে হয়ত ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হতো না।’

/এমএম/এফকে/