বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) র‍্যাগিং নিয়ে আপত্তি করায় এক ছাত্রকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দিয়েছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু হলের চতুর্থ তলায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রের নাম মুকুল আহমেদ। তিনি বর্তমানে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

ভুক্তভোগী মুকুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের দশম ব্যাচের ছাত্র ও নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার বরকান্দা গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তানজিদ মঞ্জু ও সিহাব অষ্টম ব্যাচের ইংরেজী বিভাগের ছাত্র। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত। 

বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট আরিফ হোসেন বলেন, মুকুল আহমেদ বঙ্গবন্ধু হলের ৫০২০ নম্বর কক্ষে থাকে। মুকুল আহমেদকে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়েছে বলে জেনেছি। র‍্যাগিংয়ের বিষয় নিয়ে সে আপত্তি করায় এই হামলা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। আমরা ঘটনা খতিয়ে দেখছি।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুকুল বলেন, বৃহস্পতিবার আমি জানতে পারি আমাদের একাদশ ব্যাচের ছোটভাইদের বঙ্গবন্ধু হলের একটি কক্ষে ডাকা হয়েছে। এ নিয়ে আমাদের ব্যাচের ফেসবুক মেসেঞ্জার ডিসকাশন গ্রুপে আমি আপত্তি জানাই। ওই দিন সন্ধ্যায় ওই গ্রুপে আমি লেখি, ব্যাচের নামে ছোট ভাইদের ডাকা হয়েছে, অথচ আমরা জানি না। আগেও এভাবে ডেকে র‍্যাগিং করা হয়েছে অনেককে। তখন বিভাগের শিক্ষকদের কাছে আমাদের কৈফিয়ত দিতে হয়েছে। এখন আবার ডাকা হয়েছে, এটা বাড়াবাড়ি ছাড়া কিছুই না।

মুকুল আরও বলেন, কিছুক্ষণ পরে আমাদের ব্যাচের তানজিদ মঞ্জু ও শিহাব আমাকে মোবাইল ফোনে কল করে শেরে বাংলা হলে যেতে বলে। রাত ৮টার দিকে বঙ্গবন্ধু হলের পাঁচতলার থেকে নিচে নামতে গিয়ে চতুর্থ তলায় তানজিদ ও শিহাবের সঙ্গে দেখা হয়। তারা আমাকে ধরে চতুর্থ তলার ৪০১৮ নম্বর কক্ষে নিয়ে গিয়ে আটকে ফেলে। কক্ষের অন্যদের বের করে দিয়ে তার সঙ্গীকে নিয়ে আমাকে মারধর করে। তারা জানতে চায়, মেসেঞ্জারে কেন এসব লিখেছি। আমার জন্য সে একাদশ ব্যাচটি গোছাতে পারছে না।  

মুকুল আহমেদ বলেন, এরপর আমাকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। জিআই পাইপ আর ভাঙা কাঠের চেয়ারের হাতল দিয়ে পিটিয়ে আমার একটি হাত ভেঙে দেয়। শুক্রবার সকালে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমি মৌখিকভাবে জানিয়েছি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলে অভিযোগ দেব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম বলেন, ঘটনাটি শোনার পর আমি ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া নিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা মুকুলের সার্বিক খোঁজখবর নিচ্ছি। সে অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেও তাকে সহযোগিতা করা হবে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরকে/এএএ