বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মুকুল আহমেদকে নির্যাতনের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সঙ্গে যে কক্ষে ওই শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করা হয়েছে সেটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

রোববার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম। 

তিনি বলেন, ঘটনাটি শোনার পর আমি ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া নিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা মুকুলের সার্বিক খোঁজখবর নিচ্ছি। তার বাবা আজ দুপুরে ক্যাম্পাসে এসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছি। এছাড়াও হল প্রশাসন কক্ষটি সিলগালা করে দিয়েছে।

ড. খোরশেদ আলম জানান, রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নাজমুল কায়েসকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান রিফাত ফেরদৌস ও পদার্থ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ মাহফুজ আলম। তারা ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন।  

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু হলের চতুর্থ তলায় ডেকে নিয়ে মুকুল আহমেদকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেন অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী তানজিদ মঞ্জু ও সিহাব। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। 

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুকুল বলেন, বৃহস্পতিবার আমি জানতে পারি আমাদের একাদশ ব্যাচের ছোট ভাইদের বঙ্গবন্ধু হলের একটি কক্ষে ডাকা হয়েছে। এ নিয়ে আমাদের ব্যাচের ফেসবুক মেসেঞ্জার ডিসকাশন গ্রুপে আমি আপত্তি জানাই। ওই দিন সন্ধ্যায় ওই গ্রুপে আমি লেখি, ব্যাচের নামে ছোট ভাইদের ডাকা হয়েছে, অথচ আমরা জানি না। আগেও এভাবে ডেকে র‍্যাগিং করা হয়েছে অনেককে। তখন বিভাগের শিক্ষকদের কাছে আমাদের কৈফিয়ত দিতে হয়েছে। এখন আবার ডাকা হয়েছে, এটা বাড়াবাড়ি ছাড়া কিছুই না। কিছুক্ষণ পরে তানজিদ মঞ্জু ও সিহাব আমাকে মোবাইল ফোনে কল করে শের-ই-বাংলা হলে যেতে বলে। রাত ৮টার দিকে বঙ্গবন্ধু হলের পাঁচতলা থেকে নিচে নামতে গিয়ে চতুর্থ তলায় তানজিদ ও সিহাবের সঙ্গে দেখা হয়। তারা আমাকে ধরে চতুর্থ তলার ৪০১৮ নম্বর কক্ষে নিয়ে গিয়ে আটকে ফেলে। কক্ষের অন্যদের বের করে দিয়ে তার সঙ্গীকে নিয়ে আমাকে মারধর করে। তারা জানতে চায়, মেসেঞ্জারে কেন এসব লিখেছি। আমার জন্য সে একাদশ ব্যাচটি গোছাতে পারছে না। এরপর আমাকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। জিআই পাইপ আর ভাঙা কাঠের চেয়ারের হাতল দিয়ে পিটিয়ে আমার একটি হাত ভেঙে দেয়। শুক্রবার সকালে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয়। 

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর