কলেজে পড়া অবস্থায় উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তা মাথায় আসে। তবে পড়াশোনার চাপ এবং পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাডমিশনের জন্য সেই সুযোগ হঠে ওঠেনি। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখেই শখের বসেই স্বল্প পরিসরে উচ্চ লাভের আশা না করেই মাত্র পাঁচ হাজার টাকায় শুরু করেন নিজের অনলাইন বিজনেস। 

বর্তমানে তার ফেসবুক পেজের মাধ্যমে নিজের ডিজাইন করা হ্যান্ডব্লক শাড়ি, ব্লাউজ ও জুয়েলারি বিক্রি করছেন। ভবিষ্যতে এর পরিধি বাড়িয়ে দেশের স্বনামধন্য বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে শো-রুম খোলার স্বপ্ন বুনছেন ঢাবির লোক প্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাফাত-ই জান্নাত তাসমিয়াহ।

শুরুতে বাবা-মা কে না জানিয়ে শুধু ছোট বোনকে জানিয়ে শুরু করেন নিজের অনলাইন বিজনেস। পরে মাকে জানালে বাধা না হয়ে আর্থিক ও মানসিকভাবে অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন অনেক বেশি। তাছাড়া বন্ধুবর খালার সাহায্য ও অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন তাসমিয়াহ।

ব্যবসার বিস্তৃতি একদিন অনেক বড় হবে এবং সবাই তাকে এই সূত্রেই চিনবে, সেই চিন্তা থেকেই নিজের বিজনেস পেজের নাম দেন ‘পরিধি’। শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুবান্ধব, পরিচিতরা গ্রাহক থাকলেও এখন দেশের বিভিন্ন জায়গা এমনকি প্রবাসীরাও পরিচিতজনকে উপহার দিতে তার পেজ থেকে বিভিন্ন পণ্য অর্ডার করছেন।

তাসমিয়াহ বলেন, কলেজে থাকতেই ইচ্ছে ছিল কিন্তু সুযোগ হয়ে উঠেনি। পরে ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে ২০২২ সালের ৬ অক্টোবর একাই বিজনেস শুরু করি। এখন মা এবং খালামনির আর্থিক ও মানসিক সাপোর্ট বেশি পাই। আমাকে অনুপ্রেরণা জোগাতে তারাও আমার থেকে শাড়ি অর্ডার করেন। আলহামদুলিল্লাহ এখন আমাকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে অনেকেই চেনে। যখন আমাকে কেনাকাটার সূত্রে কেউ কল দিয়ে বলে আপনি পরিধির আপু না? তখন খুব ভালো লাগে।

এক কালারের শাড়িতে নিজে ডিজাইন করে কারিগর দিয়ে ব্লক করিয়ে বাহারি ডিজাইনের শাড়িতে রূপ দেন তাসমিয়াহ। পরে শাড়ি ও জুয়েলারি পরে নিজের পণ্যের মডেলিং তিনি নিজেই করে থাকেন। 

ইতিমধ্যে তার হ্যান্ডব্লক শাড়ি বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকরাও তার উদ্যোক্তা হওয়ার পথে অনুপ্রেরণা দিয়ে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচমেট থেকে শুরু করে ডিপার্টমেন্ট বা কবি সুফিয়া কামাল হলের ফ্রেন্ড, সিনিয়র ও জুনিয়ররা এখন তার ক্রেতা। 

অনলাইনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হোম ডেলিভারির মাধ্যমে ঘরে বসেই পণ্য ক্রয় করেন অনেকেই। ভবিষ্যতে আরও বড় উদ্যোক্তা হয়ে আরও অনেকদূর এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন অদম্য এই মেধাবী শিক্ষার্থী।

কেএইচ/কেএ