ঢাবির হলে ছাত্রলীগ নেতার কক্ষে গাঁজাসহ ধরা বহিরাগত শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অর্পন মাহমুদের কক্ষে প্রায় ১০০ গ্রাম গাঁজাসহ এক বহিরাগত শিক্ষার্থীকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে। পরে তাকে পিটিয়ে হল থেকে বের করে দেন হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের ৩৫৪ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ওই শিক্ষার্থীর নাম মোহাম্মদ শেখ জামিল। তিনি ঢাকা কলেজের ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী।
বিজ্ঞাপন
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাইরে থেকে হলে রিকশায় চড়ে আসতেন। তিনি রিকশাচালকদের ভাড়া দিতেন না। রোববার সন্ধ্যা ৭টায় তিনি হাতেনাতে ধরা পড়েন। প্রাথমিকভাবে তাকে হল অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরেই হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহমুদ অর্পনের রুমে থাকছেন বলে স্বীকার করেন। পরে তাকে কক্ষে নিয়ে যাওয়া হলে তার কাছ থেকে ১০০ গ্রাম ওজনের এক প্যাকেট গাঁজা পাওয়া যায়।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের গ্রুপের অনুসারী পরিচয় দিয়ে জামিল দীর্ঘদিন ধরে সূর্যসেন হলের ৩৫৬ নম্বর কক্ষে থাকছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে রিকশায় চড়ে এসে ভাড়া দিচ্ছিলেন না। আজ তাকে হাতেনাতে ধরে পিটিয়ে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এসময় তার কাছ থেকে গাঁজা পাওয়া যায়।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী নেতা শৈশব খান বলেন, প্রায় প্রতিদিন এমন ঘটনা আমাদের নজরে আসছিল। শনিবার আমি একজন রিকশাচালককে হলগেটে দেখি। তিনি ভাড়া না দেওয়ার বিষয়টি জানালে তাকে নিয়ে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে অভিযুক্ত জামিলকে শনাক্ত করি। এরপর রিকশাচালকের ফোন নম্বর রেখে দেই। রোববার হলের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত জামিলকে হাতেনাতে ধরলে আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে পাই। আমি তাৎক্ষণিকভাবে রিকশা চালককে ফোন দিলে এর সত্যতা নিশ্চিত হই।
তিনি বলেন, এরপর তাকে হাউজ টিউটর মাহমুদ স্যারের কাছে নিয়ে যাই। এসময় প্রক্টরিয়াল টিম সেখানে চলে আসে। মামলা ছাড়া পুলিশে দিলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে ভেবে পুলিশে সোপর্দ করা হয়নি। এরপর তাকে শিক্ষার্থীদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাছাড়া সামান্য ভাড়ার জন্য রিকশাচালক মামলা করতেও অপরাগতা জানান। পরে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত জামিলকে মেরে হল থেকে বের করে দেন।
তার কাছে গাঁজা পাওয়ার ব্যপারে জানতে চাইলে শৈশব খান বলেন, আমরা সেখানে বেশিক্ষণ ছিলাম না। শিক্ষার্থীরা ঘর তল্লাশি করে গাঁজা পেতেও পারেন, এটা আমার জানা নেই।
তবে এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহমুদ অর্পনকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূইয়া বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমাকে শিক্ষার্থীরা অবহিত করেছেন। দীর্ঘদিন ধরেই হলের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অনেক রিকশাচালক ভাড়া না দেওয়ার অভিযোগ করে আসছিলেন। আজ শিক্ষার্থীরা তাকে (জামিল) হাতেনাতে ধরেন। পরে জানা যায়, সে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী। এখানে সে একজনের কাছে আত্মীয় পরিচয়ে থাকে। সে বহিরাগত হওয়ায় প্রক্টরিয়াল টিম তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যেতে চেয়েছিল। তবে হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার কথা বলে ছাড়িয়ে নেন। এরপর শিক্ষার্থীরাই তাকে হল থেকে বের করে দেন।
অভিযুক্তের কাছে গাঁজা পাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ঘটনার কিছুক্ষণ পরে আমি তার কাছে গাঁজা পাওয়ার কথা শুনেছি। সোমবার হলে এসে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেএ