যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে ঢাকা কলেজে পালন করা হয়েছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে অর্পণ করা হয়েছে পুষ্পার্ঘ্য। এছাড়াও বুদ্ধিজীবীদের জীবনীর ওপর আলোচনা সভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, দেয়ালিকা উদ্বোধন, কালো ব্যাজ ধারণসহ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির পালন করেছে ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে, জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি। এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আ.ন.ম খুররম অডিটোরিয়ামে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের জীবন ও কর্ম এবং মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদান সম্পর্কে  আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী করে উদ্বোধন করা হয় দেয়ালিকার।

দুপুরে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে ঢাকা কলেজের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ.টি.এম মইনুল হোসেন, শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস সিকদারসহ অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা ও কর্মচারীরা।

মূলত, তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উজ্জীবিত করতেই এসব কর্মসূচি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করা হচ্ছে বলে জানান ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই পাকিস্তানি হায়েনারা নির্মম গণহত্যা চালিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় শেষ সময়ে পরাজয় নিশ্চিত জেনে জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তানদেরকে হত্যা করেছে। এদেশের হাজার বছরের ঐতিহ্য নিয়ে গবেষণা করে তারা (পাকিস্তানিরা) বুঝতে পেরেছিল বাঙালি জাতির বিকাশ বুদ্ধিবৃত্তিক। আর এর মূল ভিত্তি হলেন বুদ্ধিজীবীরা। 

তিনি আরও বলেন, একটি রাষ্ট্র চলে দুটি কাঠামোর ওপর। একটি প্রশাসনিক অন্যটি বুদ্ধিবৃত্তিক কাঠামো। বুদ্ধিজীবীরা একটি জাতিকে জাগ্রত রাখেন। তাদের চিন্তা, দর্শন, সংস্কৃতিকে ধারণের মাধ্যমে একটি জাতিকে বাঁচিয়ে রাখে। তাই এই প্রজন্মের কাছে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের চিন্তা-চেতনা, কর্মকে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাহলে তরুণ প্রজন্ম দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে উঠবে। 

অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ঢাকা কলেজের সাবেক তিন কৃতি শিক্ষার্থীও ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে শাহাদত বরণ করেন। তারা হলেন— মোফাজ্জেল হায়দার চৌধুরী, এ আর খান খাদিম এবং ডা. মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী। আমরা তাদের স্মৃতি এবং দেশের জন্য নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগের কথা শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরছি। কারণ, আগামীদিনের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আবশ্যক।

আরএইচটি/এমএ