‘পাকিস্তান শাসনামলে ডাকসু ভবনে সরাসরি হামলা হয়নি, সেখানে স্বাধীন বাংলাদেশে ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ সরাসরি ডাকসু ভবনে ছাত্রনেতাদের উপর নৃশংস হামলা করেছে। কিন্তু আমাদের তারা দমিয়ে রাখতে পারেনি। আমরা আগামীতে ক্যাম্পাসে ডাকসুসহ সকল হামলার বিচার নিশ্চিতে লড়াই জারি রাখবো।’

শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে শাহবাগ জাদুঘরের সামনে ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর ডাকসুতে ‘ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীদের হামলার’ বিচারহীনতার ৪ বছর উপলক্ষে নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, সেই হামলার পর আমাদের উপর প্রতিনিয়ত হামলা করছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কিন্তু আমাদের তারা দমিয়ে রাখতে পারেনি।

ছাত্র অধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, সেসময়ে হামলায় নেতৃত্বে দেওয়া সাদ্দাম হোসেন পরবর্তীতে পুরস্কার হিসেবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি হয়েছেন।

তিনি বলেন, সেই হামলায় আমার কিডনি ও চোখে মারাত্মক জখম হয়েছিল। ভিপি নুরের মেরুদণ্ড ফ্র্যাকচারসহ অনেকেই গুরুতর আহত হন। অনেকেরই এখনো দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা চলছে। কিন্তু হামলায় জড়িতদের বিচার না করে উল্টো ছাত্র পরিষদের নামে মামলা হয়েছে। 

সেই হামলার ভুক্তভোগী ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, সেদিন ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সঞ্জিত চন্দ্র দাস, সাদ্দাম হোসেন ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আল মামুনদের নেতৃত্বে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা হয়েছে। আমার হাতে ১৮টি সেলাই লেগেছে। ফারবী আইসিইউতে ছিল। ভিপি নূরসহ অনেককেই চরমভাবে আহত করা হয়। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে বিচার তো পরে কোনো তদন্তও হয়নি। আমরা এমন ন্যাক্কারজনক হামলার বিচার চাই। 

ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশীদ মামুনের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি নাহিদ উদ্দিন তারেক, নেওয়াজ খান বাপ্পি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুবাইরুল আলম, প্রচার সম্পাদক আবু রায়হান, বিজ্ঞান সম্পাদক আখতারুজ্জামান সম্রাট, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি আসাদ বিন রনি, তিতুমীর কলেজ সভাপতি আফতাব মাহমুদ ও ঢাকা কলেজের রাকিব হোসেন। 

২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনের ভিপি নুরুল হক নুরের রুমে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর, আদীব, নাজমুলসহ ২৯ জন আহত হন। হামলায় ভিপি নুরের মেরুদণ্ডে ফ্রাকচার, আরিফ ও মেহেদীর কিডনি ড্যামেজ, নাজমুল ও সাইফুলের হাত ভাঙা, আমিনুল ও সোহেলের মাথায় গুরুতর আঘাত এবং ফারাবি আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। 
আহতদের অনেকেরই এখনো চিকিৎসা চলমান রয়েছে। পরবর্তীতে ভিপি নূর শাহবাগ থানায় বাদি হয়ে একটি মামলা করলে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ৩ জনকে আটক করা হয় কিন্তু পরবর্তীতে তাদের জামিন দেওয়া হয়।  

কেএইচ/এমএসএ